একটি স্বপ্ন ভঙ্গ ও স্বপ্ন পূরণের গল্প

সফলতা শুধু মাত্র একটি শব্দ নয়,এটি একটি আবেগ,সহস্র ভালোবাসা আর মায়ায় জড়ানো একটি উত্তাল শব্দ! কে না চায় তার? জীবনটা সাফল্য ভরে উঠুক, প্রতিটা ব্যাক্তি তার জীবনটাকে সাফল্যমণ্ডিত উন্মুখ হয়ে থাকে। তাই তো, জীবনের প্রতিটি ধাপে ধাপে আমরা সাফল্যর স্বর্ণশিখরে পৌছার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাই। কেউ কেউ সফলতার অমীয় স্বাধ গ্রহণ করি কেউবা মুখ থুবড়ে পড়ে যাই। তবে সফলতা শুধু মাত্র একবার পেলে যে এর স্বাদ চলে যায় তা কিন্তু নয় আমাদের সফলতা যতবারই আসুক ততবারই আমাদের আরেকটি সফলতা পাবার আগ্রহ বেড়ে যায়! এটা অনেকটা অর্থনীতির অভাব আর চাহিদার সুত্রের মত। তাই যারা সফলতা পায় নি, তারা কিন্তু ব্যর্থ নয় তাদেরও সফলতা আসবে।

যাইহোক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটা আসলে বিশ্ববিদ্যালয় নয় প্রতিটা শিক্ষার্থীর আবেগ আর ভালোবাসার নাম। অবশ্য তালিকার প্রথমেই চলে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন কার না থাকে? আমরা যারা শিক্ষার্থী তারা এই স্বপ্নটুকু লালিত করে আসছি যুগ যুগ ধরে। তেমনি আমিও করেছিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমত ও মা বাবার দোয়ায় আমার ভাগ্যে সেই বহুল প্রত্যাশিত সোনার হরিণটি ধরা দিয়েছে!!

আল্লাহ আমার আশা পূর্ণ করেছে, যার দরুন আমিও পৌছে গেলাম লক্ষাধিক স্বপ্নাতুর মানুষের (যাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে) কাতারে!!

আমার এই স্বপ্ন পূরণের পথটি তেমন মসৃণ ছিল না, অনেক বাধা, অনেক সংকট ডিঙ্গাতে হয়েছে আমাকে! মাঝেমাঝে নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়েছে,মনে হয়েছে আমি পারব না, আমার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে! কিন্তু পরক্ষনে আমার মনের ভিতর জোর আনার চেষ্টা করেছি। যেভাবেই হোক, আমাকে স্বপ্ন স্বার্থক করতে হবে! নিজেকে আশ্বস্ত করেছি,অভয় দিয়েছি! আর সেই জোর আমাকে আমার প্রানের ক্যাম্পাসে পাদচারণায় অধিকার দিয়েছে!

আমি সেই উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষ থেকে স্বপ্ন দেখছি পাবলিকে পড়ব! মনের মধ্যে গনমাধ্যম নিয়ে কাজ করার তীব্র ইচ্ছা ছিল, ইচ্ছা ছিল ছোটবেলা থেকেই আমি সাংবাদিক হব! অতএব অলিখিত ভাবেই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ার আকাঙ্ক্ষা চলে আসে! কিন্তু আমার ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল কমার্স। আমি কমার্সের ছাত্র ছিলাম। তারপরেও মনের মধ্যে আশা ছিল ঘ ইউনিটে তেই রয়েছে আমার প্রিয় বিষয়টি। লক্ষ্য ছিল ঘ ইউনিট।

এইচ এস সি পরীক্ষা দেবার পর ভর্তি হয়ে গেলাম কোচিংএ। ঘ ইউনিটের পাশাপাশি আমি সি ইউনিটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম! তবে ডি ইউনিট ছিল প্রধান লক্ষ্যবস্তু। দেখতে দেখতে পরীক্ষা চলে এলো, এবং আমিও অভিজ্ঞতার জন্য ঢাবি আর জবিতে পরীক্ষাটা দেয়। ফলাফল অনেক নাজেহাল ভাবে আমি ফেল করেছিলাম।

তারপরে নিজের ভেতর থেকে জোর অনুভব করলাম। নাহ! আমি আর চাপ নিতে চাই না। আমি আমার স্বপ্নটাকে কিছুতেই ফিকে হতে দিব না। আমি আর চট্টগ্রামের সি ইউনিটের প্রস্তুতি নিব না। আমি শুধু ঘ ইউনিটের জন্য প্রস্তুতি নিব। মূলত এই সিদ্ধান্তই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। হাতে আছে এক মাস, পড়তে হবে অনেক। শুরু করে দিলাম কঠোর পরিশ্রম। বাংলা, ইংলিশ, সাধারণ জ্ঞান! এই তিনটি বিষয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে! সাধারণ জ্ঞান মোটামুটি কোচিং এর বইটা শেষ করলাম, হাতে আছে এম পি থ্রির মত বিশাল বই! ওটা শেষ করতে সময় লেগেছে ১৭ দিন। এর মাঝে শেষ করলাম বাংলার জন্য সরোবর বইটি। পাশাপাশি ইংলিশের ক্লিপ্স টোফেলের এক্সারসাইজ ও মিনিটেস্ট শেষ করলাম! হাতে আছে ১৩ দিন আমার হাতে আছে ৪টি প্রশ্ন ব্যাংক! শুরু হয়ে গেল। প্রশ্ন ব্যাংক বিশ্লেষণ যেভাবেই হোক শতভাগ প্রস্তুতি চাই! দেখতে দেখতে পরীক্ষা চলে এলো চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে উঠে স্বপ্নের পথে পা বাড়ালাম। এবং ট্রেনে বসেই সাম্প্রতিকের ক্যাম্পসুল ১ ২ পড়ে ফেললাম! ঢাকায় গিয়ে আর পড়ি নি! পরীক্ষা দিয়ে দিলাম। ঢাবি আর জবির দুটোই পরীক্ষা ভালো দিলাম। ফলাফল দেয়ার পর দেখলাম, ঢাবিতে আমার পজিশন ৯০৫, পড়া হল না আর ঢাবিতে। জবিতে আমার চান্স হয়ে গেল, পজিশন ২২৩ (এখানে আমার প্রিয় বিষয়টি আসতেও পারে তবে যাই আসুক আমি আর জবিতে যাব না)!

এরপরে চবি মিশন, ৩ দিন বাকি টুকটাক পড়ালেখা চলছিল! পরীক্ষা দিয়ে দিলাম ঘ ইউনিটে সম্মিলিত ৩১৬৯ আর বি তে ৩১৯। অবশেষে আমার স্বপ্ন স্বার্থক হল যদিও অন্য বিষয়ে। বিষয় হিসেবে পেলাম ইংরেজি!

চট্টগ্রামের ছেলে হওয়াই পরিবারের স্বার্থে এখানেই থাকতে হবে! এটাই আমার জন্য উত্তম।

জানিনা আমার আজন্ম লালিত স্বপ্ন সত্যি হবে কিনা। আদৌ সাংবাদিক হতে পারব কিনা জানি না, তবে চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণের ক্যাম্পাস ও ঐতিহাসিক শাটল ট্রেনে চড়ার তৃপ্তি আমাকে দেবে ঘুরে দাড়ানোর নতুন এক প্রত্যয়। সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। মুষ্টিবদ্ধ অনুপ্রেরণায় হাতছানি দিয়ে ডাকছে। প্রানের বিশ্ববিদ্যালয় 😍😍

অপু
ইংরেজি বিভাগ


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

(পেজের লেখা বা সেবা যদি ভালো লাগে অথবা কোনভাবে আপ্নারা উপকৃত হন, তাহলে ৫* রিভিউ দিয়ে মতামত জানান। এটা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। পেজের লেখাগুলো সবার আগে পেতে ফলোয়িং অপশনে গিয়ে সী ফার্স্ট সেট করুন। নিয়মিত লাইক না দিলে লেখা আ[পনার সামনে যাবেনা। কমেন্ট এ লেখা সম্পর্কে আপনার মতামত জানান। গুরত্বপূর্ণ লেখাগুলো শেয়ার করে নিজের টাইমলাইনে রাখুন) Write Review here - https://www.facebook.com/pg/EngineersDiary16/reviews/?ref=page_internal join our Community group https://www.facebook.com/groups/CEESBD/ Science Study- https://www.facebook.com/groups/ScienceStudy.EngineersDiary/ Join for admission Query https://www.facebook.com/groups/EMV17/ visit our website- https://engineersdiarybd.blogspot.com/ )
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.