PGRE (GRE Physics test)


যারা পদার্থবিজ্ঞানে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চায় তাদেরকে সাধারণ জিআরই এবং টোফেল-এর বাইরেও আরেকটি পরীক্ষা দিতে হয়- ফিজিক্স জিআরই (Physics GRE অথবা P-GRE)। ব্যতিক্রমী কিছু উদাহরণ ছাড়া অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি অথবা মাস্টার্সে ভর্তির জন্য P-GRE বাধ্যতামূলক। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পড়তে আসা ছাত্রদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রচলিত পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের ছাত্রছাত্রীরাও পদার্থবিজ্ঞান পড়তে আগ্রহী। বিভিন্ন সময়ে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছে যে কীভাবে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া যায়। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে P-GRE পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সাধারণ কিছু বিষয় আমি এই লেখায় তুলে ধরতে চাই।
বিষয়বস্তু এবং পরীক্ষাপদ্ধতি স্নাতক পর্যায়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিন বছরের পদার্থবিজ্ঞানের যে বিষয়গুলো পড়ানো হয় সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই সাধারণত পরীক্ষাটি সাজানো হয়। পরীক্ষায় ১০০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকে, সময় থাকে দুই ঘণ্টা ৫০ মিনিট। এটি paper based test, পরীক্ষাটি কম্পিউটারে বা অনলাইনে দেওয়া যায় না। পরীক্ষায় যে বিষয়গুলো থাকবে সেগুলো হল- Classical mechanics (20%) Electromagnetism (18%) Optics and wave phenomena (9%) Thermodynamics and statistical mechanics (10%) Quantum mechanics (12%) Atomic physics (10%) Special relativity (6%) Laboratory methods (6%) Specialized topics (9%) মোট ১০০টি প্রশ্নে পরীক্ষা হলেও এই পরীক্ষার ফলাফল অন্যান্য Standardized Test এর মতই বিশ্বব্যাপী পরীক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফলাফলের ভিত্তিতে পরিমার্জিত করে প্রকাশ করা হয়। একজন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় ২০০-৯৯০ এর মাঝে যেকোন নম্বর পেতে পারে, তবে অনুমোদিত নম্বরগুলো ১০ এর ব্যবধানে বাড়ে। অর্থাৎ, একজন শিক্ষার্থী ২০০, ২১০, ২২০ এভাবে ৯৯০ পর্যন্ত পেতে পারে। নম্বরের পাশাপাশি প্রকাশ করা হয় সকল পরীক্ষার্থীর মাঝে শতকরা কত ভাগ পরীক্ষার্থী ঐ শিক্ষার্থীর চেয়ে কম নম্বর পেয়েছে। কেন প্রয়োজন P-GRE? কত নম্বর পেতে হবে? প্রস্তুতি সম্পর্কে বলার পূর্বে বলা দরকার এই পরীক্ষাটি কেন প্রয়োজন এবং ভর্তির আবেদনপত্রে এটি কতখানি গুরুত্ব রাখে। একটি তিন ঘণ্টার বহুনির্বাচনী (MCQ) প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর তিন বছরের পড়াশোনার ব্যাপ্তি নির্ধারণ হয় না। সুতরাং P-GRE পরীক্ষার ফলাফল কোন শিক্ষার্থীর পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞানের অদ্ব্যর্থ পরিমাপ নয়। এটির প্রাথমিক প্রয়োজন হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞানের একেবারেই মৌলিক বিষয়গুলি সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থীর পরিচয় আছে কিনা এবং সমস্যা সমাধানে সে ঐ ধারণাগুলো দ্রুত চিহ্নিত ও ব্যবহার করতে পারে কিনা সেটা নির্ধারণ করা। এই পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন সমাধানের জন্য গড়ে ১.৭ মিনিট সময় পাওয়া যায়। তদুপরি, অধিকাংশ সমস্যার উদ্দেশ্যই থাকে ছোটখাটো কোন হিসাব করা অথবা মৌলিক কোন তত্ত্বের (যেমন কেপলারের তত্ত্ব অথবা পাউলির বর্জন নীতি) প্রাথমিক প্রয়োগ। সময় স্বল্পতার জন্য এই পরীক্ষায় স্বাভাবিকভাবেই বড় কোন সমস্যা সমাধান করতে হয় না। ভর্তির সময়ের অভিজ্ঞতা এবং এখানকার মাস্টার্স/পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে যা বুঝতে পারি টা হল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মনে করে- যে শিক্ষার্থী পদার্থবিজ্ঞানে যথেষ্ট ভাল, সে P-GRE তে অনেক খারাপ করবে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটা নিজস্ব কাট-অফ থাকে, কোন আবেদনকারী P-GRE তে তার চেয়ে কম পেলে সাধারণত ঐ বিশ্ববিদ্যালয় সেই শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেয় না। বিগত দুই বছর University of Texas at Austin এ এই কাট-অফ ছিল ৮৪০। সাধারণভাবে ধারণা করা যায়, মোটামুটি ভাল থেকে মধ্যম র‍্যাংকিং-এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য P-GRE তে অন্তত ৮৫০ নম্বর নিশ্চিত করতে হবে। প্রস্তুতি- কত সময় লাগবে? কী কী পড়ব? P-GRE তে ভাল করতে হলে কতদিন সময় দিতে হবে- এই প্রশ্নটা আমাকে অনেকেই করে। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন, কারণ এটা পরীক্ষার্থীর উপর নির্ভর করবে। তবে পরীক্ষার বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভূক্ত অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কেই আমাদের দেশের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বেশ ভালোভাবে শেখানো হয়। অন্তত আমাদের সময় হতো, এখনকার অবস্থা বলতে পারি না। যেহেতু পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেকে P-GRE দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী, আমি আমাদের সময়ের উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসকে রেফারেন্স ধরে আলোচনা করব। তবে উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসে পড়ানো হয়েছে বলে সব প্রশ্ন উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষার মত হবে সেটা ভাবার কোন কারণ নেই। P-GRE এর প্রশ্ন অনেক কঠিন না হলেও পরীক্ষায় যথেষ্ট ভালো করার জন্য প্রবলেম সলভিং এর অভ্যাস থাকা প্রয়োজন। এই পরীক্ষার সহজতম অংশ হচ্ছে- ক্লাসিকাল মেকানিক্স, অপটিক্স, থার্মোডাইনামিক্স এবং আপেক্ষিকতা। এগুলো মিলেই পুরো পরীক্ষার প্রায় ৪৫টি প্রশ্ন হয় এবং এসকল বিষয়ের অধিকাংশই আমাদের সময়কার উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত ছিল। ক্লাসিকাল মেকানিক্সে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মাঝে রয়েছে গতির সমীকরণ, ভরবেগ, কৌণিক ভরবেগ এবং শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি, মহাকর্ষ (কেপলারের সূত্র এবং নিউটনের তত্ত্ব), প্রবাহী বলবিদ্যা (বিশেষত প্যাসকেল এবং আর্কিমিডিসের তত্ত্ব), সরল ছন্দিত স্পন্দন (স্প্রিং এবং সরল দোলকের নীতি)। স্নাতক পর্যায়ে আলাদা করে পড়ানো হয় এমন বিষয়ের মাঝে রয়েছে Lagrangian এবং Hamiltonian formalism। এ ধরনের বিষয় থেকে প্রশ্ন মূলত কোন সিস্টেমের Lagrangian এবং Hamiltonian এবং সেখান থেকে পাওয়া গতির সমীকরণ লিখতে পারার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে। এ ধরনের বিষয় থেকে সাধারণত সর্বোচ্চ ২টি প্রশ্ন থাকে। অপটিক্স এর বড় অংশ ধরে থাকে প্রতিফলন, প্রতিসরণ, দর্পণ এবং লেন্সের বৈশিষ্ট্য। তরঙ্গ সংক্রান্ত বিষয়ের মাঝে তরঙ্গের প্রাথমিক ধারণাগুলো (তরঙ্গদৈর্ঘ্য, তরঙ্গবেগ, পর্যায়, কম্পাঙ্ক, তরঙ্গের উপরিপাতন) নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকে। Interference, Diffraction, শব্দের ডপলার ক্রিয়া- এধরনের বিষয়গুলো থেকে ১-২টি প্রশ্ন থাকতে পারে। থার্মোডাইনামিক্স এর প্রশ্নগুলোতে প্রধানত তাপগতিবিদ্যার প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র, আদর্শ গ্যাস সমীকরণ এবং আদর্শ গ্যাসের আণবিক গতিতত্ত্ব, রুদ্ধতাপীয়, সমোষ্ণ প্রক্রিয়া, কার্নো চক্র, এনট্রপি এই বিষয়গুলোই থাকে। সম্ভাব্যতার মাধ্যমে এনট্রপির ব্যাখ্যা, ম্যাক্সওয়েল-বোল্টজম্যান বণ্টন নীতি এবং ম্যাক্সওয়েল রিলেশনস- এই বিষয়গুলো থেকে P-GRE তে প্রায়শই প্রশ্ন আসে। আমাদের উচ্চ মাধ্যমিকে আপেক্ষিকতায় লরেঞ্জ রূপান্তর এবং লরেঞ্জ রূপান্তর ব্যবহার করে দৈর্ঘ্য সংকোচন, কাল দীর্ঘায়ন- এই বিষয়গুলো পড়ানো হয়। সেই সাথে পড়ানো হয় ভর-শক্তি সমীকরণ। এগুলোর পাশাপাশি আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় এবং আলোর ডপলার ক্রিয়া পড়তে হবে। ১৫টি প্রশ্ন থাকে Specialized topics এবং Laboratory Methods থেকে। Specialized topics ব্যাপারটি খুব সুসংজ্ঞায়িত নয়, তবে কিছু বিষয় জানা এবং বুঝে রাখাটা এক্ষেত্রে বেশ ফলপ্রসূ একটা কৌশল। এরকম একটি বিষয় হল Standard Model of Particle Physics। স্ট্যান্ডার্ড মডেলের মৌলিক কণিকা এবং তাদের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে প্রায়শই কিছু প্রশ্ন আসে। সেই সাথে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ বিষয়ে হাবলের নীতি, কৃষ্ণবিবরের ঘটনা দিগন্তের ব্যাসার্ধ, সমসাময়িক কিছু গবেষণা সম্পর্কে ধারণা রাখা যেতে পারে। Laboratory Methods এ সাধারণত গ্রাফ থেকে কোন তথ্য বের করা কিংবা ইন্টারপোলেশন, পরীক্ষাগারে ব্যবহার করা প্রচলিত যন্ত্রপাতি সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন এগুলো থাকতে পারে। এই পরীক্ষার অবশিষ্ট ৪০টি প্রশ্নের জন্যই সবচেয়ে বেশি পড়াশুনা করতে হয়। Electromagnetism এর প্রশ্নগুলো অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন বিষয় থেকে আসতে পারে। কিছু প্রশ্ন আসে সার্কিট বিষয়ক। আমি এই বিষয়ের জন্য যেকোন একটি স্ট্যান্ডার্ড পাঠ্যবই থেকে মৌলিক বিষয়গুলো পড়ে ফেলাটার পক্ষপাতী। এই বিষয়গুলোর মাঝে Electrostatics, Magnetostatics, Electric and magnetic fields in matter, Maxwell’s Equations, EM waves and radiation অবশ্যই থাকতে হবে। অনেকেই তড়িৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রের লরেঞ্জ রূপান্তর পড়তে বলেন, তবে আমি সেটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে David Griffiths এর Electrodynamics বই থেকে ১-৭, ৯, ১১ এই অধ্যায়গুলো পড়েছিলাম। তবে অন্যান্য পাঠ্যবইও ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরদিকে কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং অ্যাটমিক ফিজিক্স আলাদা আলাদা বিষয় হিসেবে উল্লেখ থাকলেও আসলে এই দুই অংশ মিলিয়ে থাকা ২২টি প্রশ্ন কোয়ান্টাম মেকানিক্স থেকেই আসে। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রাথমিক প্রয়োগগুলো (কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ, ফটো-ইলেকট্রিক ইফেক্ট) সম্পর্কে ধারণা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি, বোরের Correspondence Principle, সহজ কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল সিস্টেমের জন্য শ্রোডিঞ্জার সমীকরণের সমাধান, Wave function এর normalization, wave function থেকে সম্ভাব্যতা নির্ণয়- এই বিষয়গুলো থেকে স্বাভাবিকভাবেই অনেকগুলো প্রশ্ন থাকে। পাউলির বর্জন নীতির ধারণা ব্যবহার করতে হয় এমন সমস্যাও থাকতে পারে। মাঝে মাঝে Perturbation theory থেকেও কিছু প্রশ্ন থাকে। অ্যাটমিক ফিজিক্সের প্রশ্নগুলো করা হয় রাদারফোর্ড এবং বোরের পরমাণু মডেলের ধারণাগুলোর উপর ভিত্তি করে। বিশেষত, রাদারফোর্ড মডেলের সীমাবদ্ধতা এবং বোর মডেলের স্বীকার্য এবং বোর মডেল থেকে পাওয়া হাইড্রোজেন এবং হাইড্রোজেনের মত অন্যান্য এক ইলেক্ট্রন বিশিষ্ট পরমাণুগুলোর বিভিন্ন শক্তিস্তরের ব্যাসার্ধ ও শক্তির মান- এগুলো প্রায়শই পরীক্ষায় থাকে। অপেক্ষাকৃত কঠিন বিষয়গুলোর মাঝে শিখতে হবে হাইড্রোজেন পরমাণুতে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ এবং স্পিন কীভাবে হিসাব করা হয় এবং মোট কৌণিক ভরবেগ (স্পিন + সাধারণ কৌণিক ভরবেগ) কীভাবে হিসাব করতে হয়। এই বিষয়গুলো সাধারণত কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর যেকোন প্রাথমিক কোর্সেই পড়ানো হয়। কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং অ্যাটমিক ফিজিক্স এর সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য David Griffiths এর Quantum Mechanics বইটা বেশ ভাল। এই বই থেকে প্রথম তিনটি অধ্যায় খুব ভালভাবে পড়তে হবে। চতুর্থ এবং পঞ্চম অধ্যায় থেকে মৌলিক ধারণাগুলো বোঝা এবং ছোট ছোট সমস্যা সমাধানে জোর দিতে হবে।


প্রস্তুতির সাধারণ কৌশল: যেকোন পরীক্ষায় ভালো করার জন্য তার বিষয়বস্তু ভালোভাবে রপ্ত করা আবশ্যক। P-GRE পরীক্ষাও ব্যতিক্রম নয়। তবে এই পরীক্ষার বিষয়বস্তু অনেক বড় পরিসরে বিধৃত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কিছু সহজ ও স্বাভাবিক কৌশল বেশ ভালো কাজে আসে।
(১) সাধারণ জ্ঞান এবং উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ- P-GRE তে এমন অনেক প্রশ্নই আসে যেগুলো কিছুটা সাধারণ জ্ঞান এবং উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ করেই উত্তর করা যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০০৮ সালের পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন এসেছিল- ডি ব্রগলির তত্ত্ব অনুসারে কোন পদার্থের তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং ভরবেগ কোন ধ্রুবকের মাধ্যমে সম্পর্কিত? যেহেতু ডি ব্রগলির সমীকরণটি কোয়ান্টাম ফিজিক্সের একটি সমীকরণ এখানে প্লাঙ্কের ধ্রুবক অবশ্যই থাকবে। এটুকু সাধারণ জ্ঞানের ব্যবহারই যথেষ্ট।
(২) একক/মাত্রা সম্পর্কে ধারণা- বিভিন্ন রাশির এবং ধ্রুবকের একক সম্পর্কে ধারণা থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, অনেক সমস্যা সমাধানের জন্য এটুকু জ্ঞানই যথেষ্ট। এই সংক্রান্ত কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া যায়- * প্লাঙ্কের ধ্রুবক এবং কৌণিক ভরবেগের একক অভিন্ন (ঐতিহাসিকভাবে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল। এটার জন্যই নীলস বোর ধারণা করেছিলেন যে পরমাণুতে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ কোয়ান্টাইজড হবে) * kT (বোল্টজম্যান ধ্রুবক*তাপমাত্রা), qV (চার্জ*ভোল্টেজ), mv^2 (ভর*বেগ^2), mas (ভর*ত্বরণ*দূরত্ব) এ জাতীয় রাশিগুলো কাজ/শক্তি নির্দেশ করে * RC (রোধ*ক্যাপাসিটেন্স), L/R (ইন্ডাকটেন্স/রোধ) এগুলোর একক সময়ের একক সমান * একই সমীকরণের ভিন্ন ভিন্ন পদের একক একই হবে * কোন সংখ্যার সূচকে বা লগারিদমের ভেতরে যেসকল সংখ্যা থাকে তারা এককহীন হয়।
(৩) অর্ডার অফ ম্যাগনিটিউড এবং আসন্ন মান নির্ণয় (order of magnitude calculation and approximations)- P-GRE পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। যে সকল সমস্যায় কোন মান নির্ণয় করতে হয় সেখানে অধিকাংশ সময়ই তাই অর্ডার অফ ম্যাগনিটিউড হিসাব করতে হয়। অর্ডার অফ ম্যাগনিটিউড হিসাবের সমস্যাগুলোতে সাধারণত কোন সমস্যার সমাধানে 10 এর কত সূচক (power) থাকবে সেটা মুখ্য হয়। এই ধরনের সমস্যা পেলে প্রাথমিক প্রচেষ্টা হওয়া উচিত সমীকরণে থাকা বিভিন্ন রাশি থেকে পাওয়া 10 এর সূচকগুলোকে আলাদা করে ফেলে হিসাব করা। অনেক সময় এটুকু করলেই আন্দাজ করে ফেলা যায় সঠিক উত্তর কোনটি হবে। এরপরেও যদি হিসাব করার প্রয়োজন হয় তাহলে আসন্ন মানের ব্যবহার করা যায়। আসন্ন মানের ব্যবহার করেও অনেক সমস্যার সঠিক উত্তর বের করে ফেলা যায়। কিছু প্রচলিত approximation হল- * π = 22/7 অথবা π = 3 * sqrt(2) = 1.4, sqrt(3) =1.7 * e = 2.7, 1/e = 0.37 * ln 2 = 0.69
(৪) কিছু বহুল ব্যবহৃত মান মনে রাখা- P-GRE পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সাথে সাধারণত একটি অতিরিক্ত পৃষ্ঠা দেওয়া হয়, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সব ধ্রুবক এবং প্রয়োজনীয় কিছু একক রূপান্তরের সূত্র দেওয়া থাকে। সুতরাং এগুলো মুখস্থ করার সুবিশেষ প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া যথেষ্ট অনুশীলন করলে অধিকাংশ প্রয়োজনীয় ধ্রুবকের মান এমনিতেই মনে থাকে। তবে এগুলোর বাইরে কিছু বিশেষ, বহুল ব্যবহৃত রাশিমালার মান মনে রাখা বেশ সুবিধাজনক এবং ক্ষেত্রবিশেষে বেশ কাজে আসতে পারে। যেমন- * হাইড্রোজেন পরমাণুতে ইলেকট্রনের প্রথম কক্ষপথের শক্তির মান -13.6 eV, n তম কক্ষপথে এই শক্তির মান হয় -13.6/n^2 * বোর ব্যাসার্ধ- হাইড্রোজেন পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটনের মাঝে ন্যূনতম দূরত্ব: 0.529 অ্যাংস্ট্রম। এটি প্রথম কক্ষপথের ব্যাসার্ধ। n তম কক্ষপথের ব্যসার্ধ হবে 0.529*n^2 অ্যাংস্ট্রম। * রিডবার্গ ধ্রুবক এবং রিডবার্গ সমীকরণ * একটি সুবিধাজনক কম্পাঙ্কের জন্য একটি ফোটনের শক্তির মান eV এককে মুখস্থ করে যাওয়া যেতে পারে। এতে অন্যান্য কম্পাঙ্কের জন্য ফোটনের শক্তির মান বের করা সহজ হয়ে পড়ে, প্লাঙ্কের ধ্রুবক ব্যবহার না করে সমানুপাতের সম্পর্ক ব্যবহার মান করেই বের করে ফেলা যায়। (৫) সীমাস্থ মান নির্ধারণ- যেসকল প্রশ্নে কোন রাশির সঠিক সমীকরণ নির্ধারণ করতে দেওয়া হয় সেসকল ক্ষেত্রে অনেক সময় সীমাস্থ মান নির্ধারণ করাটা একটি ফলপ্রসূ কৌশল হতে পারে। সীমাস্থ মান বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে- সমীকরণে কোন একটি রাশির মান একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা বা অপর কোন রাশির মানের কাছাকাছি হলে, বা কোন একটি রাশির মান অনেক বড় হয়ে গেলে ঐ রাশিটির মান কেমন হওয়া উচিত সেটা বিশ্লেষণ করা। প্রশ্নে প্রদত্ত অপশনগুলোর মাঝে যেগুলো সেই সীমাস্থ মানের মত আচরণ করে না, সহজেই বলে দেওয়া যায় সেগুলো সঠিক উত্তর নয়।
উপরের কৌশলগুলো কীভাবে ব্যবহার করা যায় সেটা একটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করছি। ২০০৮ সালের পরীক্ষায় নিচের প্রশ্নটি এসেছিল, আমি এখানে অপশনগুলো একটু পরিবর্তন করে এটাকে আরেকটু ‘কঠিন’ করে দিচ্ছি- A thermodynamic system, initially at absolute temperature T1 , contains a mass m of water with specific heat capacity c. Heat is added until the temperature rises to T2. The change in entropy of the water is- (A) 0 (B) T2 – T1 (C) mcT2 (D) mc ln(1-T2/T1) (E) mc ln(T2/T1) প্রথমত, এখানে অপশন (A) অবান্তর কারণ তাপ গ্রহণ করার মাধ্যমে সিস্টেমটির এনট্রপি বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, অবশিষ্ট অপশনগুলোর মাঝে সঠিক একক আছে কেবল অপশন (D) এবং (E) এর। তৃতীয়ত, এখানে সীমাস্থ মানের ধারণাও ব্যবহার করা যায়। যদি T2 আর T1 সমান হয়ে যায় তাহলে এনট্রপির পরিবর্তন শূন্য হবে। (D) এবং (E) এর মাঝে কেবল (E) এর ক্ষেত্রে এই ধারণা সঠিক থাকে। সুতরাং (E) সঠিক উত্তর।
P-GRE এর জন্য বই এবং অন্যান্য রিসোর্স সাধারণ GRE এর প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট বই এবং অন্যান্য রিসোর্স পাওয়া গেলেও P-GRE এর প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট বই বাজারে পাওয়া যায় না। অল্প যে কয়েকটি বই আছে তার মাঝে একটি বইয়ের কথা উল্লেখযোগ্য-Kahn এবং Anderson এর Conquering the Physics GRE। বইটি পদার্থবিজ্ঞান শেখার জন্য মোটেই ভাল নয়, তবে মোটামুটি একটা ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি হবার পর P-GRE প্রস্তুতির জন্য বেশ উপযোগী। এই বইটিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার পাশাপাশি অনুশীলনী হিসেবে বেশ কিছু সমস্যা দেওয়া আছে। তিনটি পূর্ণাঙ্গ Practice Test দেওয়া আছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে, বইটিতে যে সমস্যাগুলো দেওয়া আছে সেগুলো P-GRE পরীক্ষার জন্য প্রাসঙ্গিক এবং মূল পরীক্ষার কাছাকাছি মানের। ETS বিভিন্ন সময়ে পাঁচটি মূল পরীক্ষার প্রশ্ন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। অনেকের মতে, এগুলোই P-GRE পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় resource এবং এই পাঁচটি প্রশ্নপত্র সমাধান করে যাওয়াটাই যথেষ্ট। এই প্রশ্নগুলো অনলাইনে বেশ সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। অনলাইনে physicsgre.com একটি উল্লেখযোগ্য ফোরাম। শুধুমাত্র P-GRE এর জন্য নয়, পদার্থবিজ্ঞানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং আনুষঙ্গিক আলোচনার জন্যও খুব ভাল একটি প্লাটফর্ম এই ফোরামটি। অদূর এবং সুদূর ভবিষ্যতে যারা P-GRE পরীক্ষা দেবে তাদের সবার প্রতি শুভকামনা রইল।
পুনশ্চ- ## আমার বন্ধু মঈনুল হোসেন রাহাতের (বর্তমানে University of Florida তে পদার্থবিজ্ঞানে PhD করছে) মতে মধ্যম মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য P-GRE তে ৮০০ এর বেশি স্কোর থাকলেই চলে। আমি ওর সাথে সম্পূর্ণরূপে দ্বিমত পোষণ করছি না। তবে আমার কাছে threshold হিসেবে ৮৫০ অধিকতর নিরাপদ বলে মনে হয়েছে। ## রাহাত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাকে জানিয়েছে, যেটা আমি আগের পর্বে উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। Laboratory methods এর মাঝে error analysis বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের কারিকুলামে এই বিষয়টি নিয়ে খুব কম আলোচনা করা হয়, কিন্তু যেকোন Physics experiment এ margin of error একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। ## প্রথম কমেন্টে আমি একটি Dropbox link শেয়ার করেছি। এটাতে ETS কর্তৃক প্রকাশিত বিগত পাঁচটি প্রশ্ন এবং error analysis এর উপর একটি ছোট টিউটোরিয়াল আপলোড করা আছে। ## সাম্প্রতিক সময়ের পরীক্ষাগুলোর difficulty level ২০০১ এবং ২০০৮ সালের প্রশ্নগুলোর মতই, আগের প্রশ্নগুলোর চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ।
Writter: Avik Roy
Lecturer, BUET

(2)
----PGRE (GRE Physics test)-----
মোট নম্বর: vary করে, 200 থেকে 990 পর্যন্ত হয়।
সময়: 2 hour 50 minutes
প্রশ্নের ধরন: 100টি MCQ, 5 টি করে অপশন।
বাংলাদেশে কোথায় দেয়া যায়:
বছরে ৩ বার দেয়া যায়। এপ্রিল, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর। পরীক্ষার ফি 150 US DOLLARS
কেনো PGRE: আপনি যদি Physics এ M.Sc বা Ph.D করতে চান (সারাবিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ে, তবে প্রধানত US এ) তবে PGRE আপনার জন্য। অনার্স ফাইনাল ইয়ারেই পরীক্ষা দেয়া যায়। সিলেবাস হলো USA এর কোন স্ট্যান্ডার্ড ভার্সিটির ফিজিক্স undergrad. এ প্রথম তিনবছর যা পড়ায়। প্রশ্নের মানবন্টন অনেকটা নিম্নরূপ:
#1. Classical mechanics (20%)
  • kinematics
  • Newton's laws of motion
  • work and energy
  • rotational motion about a fixed axis
  • dynamics of systems of particles
  • central forces and celestial mechanics
  • three-dimensional particle dynamics
  • Lagrangian and Hamiltonian formalism
  • noninertial reference frames
  • elementary topics in fluid dynamics
#2. Electromagnetism (18%)
  • electrostatics
  • currents and DC circuits
  • magnetic fields in free space
  • Lorentz force
  • Induction
  • Maxwell's equations and their applications
  • electromagnetic waves (electromagnetic radiation)
  • AC circuits
  • magnetic and electric fields in matter
3. Optics and wave phenomena (9%)
  • wave properties
  • superposition
  • interference
  • diffraction
  • geometrical optics
  • light polarization
  • Doppler effect
#4. Thermodynamics and statistical mechanics (10%)
  • laws of thermodynamics
  • thermodynamic processes
  • equations of state
  • ideal gases
  • Kinetic theory of gases
  • ensembles
  • statistical concepts and calculation of thermodynamic quantities
  • thermal expansion and heat transfer
#5. Quantum mechanics (12%)
  • fundamental concepts
  • solutions of the Schrödinger wave equation
  • square wells (Particle in a box)
  • harmonic oscillators
  • hydrogenic atoms
  • spin
  • angular momentum
  • wave function symmmetry
  • elementary perturbation theory
#6. Atomic physics (10%)
  • properties of electrons
  • Bohr model
  • energy quantization
  • atomic structure
  • atomic spectra
  • selection rules
  • black-body radiation
  • x-rays
  • atoms in electric and magnetic fields
#7. Special relativity (6%)
  • introductory concepts of special relativity
  • time dilation
  • length contraction
  • simultaneity
  • energy and momentum
  • four-vectors and Lorentz transformation
#8. Laboratory methods (6%)
  • data and error analysis
  • electronics
  • instrumentation
  • radiation detection
  • counting statistics
  • interaction of charged particles with matter
  • laser and optical interferometers
  • dimensional analysis
  • fundamental applications of probability and statistics
#9. Specialized topics (9%)
(i) nuclear and particle physics :
  • nuclear properties
  • radioactive decay
  • fission and fusion reactions
(ii) fundamental properties of elementary particles:
  • condensed matter 
  • crystal structure
  • x-ray diffraction
  • thermal properties
  • electron theory of metals
  • semiconductors
  • superconductors
(iii) mathematical methods:
  • single and multivariate calculus
  • coordinate systems (rectangular, cylindrical, spherical)
  • vector algebra and vector differential operators
  • Fourier series
  • partial differential equations
  • boundary value problems
  • matrices and determinants
  • functions of complex variables
(iv) miscellaneous :
  • astrophysics
  • computer applications
........... ( আপনাদের কারও এ সংক্রান্ত অতিরিক্ত তথ্য জানা থাকলে কমেন্ট করুন, পোস্ট এডিট করা হবে)
Syed Emad Uddin Shubha

যারা পদার্থবিজ্ঞানে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চায় তাদেরকে সাধারণ জিআরই এবং টোফেল-এর বাইরেও আরেকটি পরীক্ষা দিতে হয়- ফিজিক্স জিআরই (Physics GRE অথবা P-GRE)। ব্যতিক্রমী কিছু উদাহরণ ছাড়া অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি অথবা মাস্টার্সে ভর্তির জন্য P-GRE বাধ্যতামূলক। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পড়তে আসা ছাত্রদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রচলিত পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের ছাত্রছাত্রীরাও পদার্থবিজ্ঞান পড়তে আগ্রহী। বিভিন্ন সময়ে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছে যে কীভাবে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া যায়। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে P-GRE পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সাধারণ কিছু বিষয় আমি এই লেখায় তুলে ধরতে চাই।
বিষয়বস্তু এবং পরীক্ষাপদ্ধতি স্নাতক পর্যায়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিন বছরের পদার্থবিজ্ঞানের যে বিষয়গুলো পড়ানো হয় সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই সাধারণত পরীক্ষাটি সাজানো হয়। পরীক্ষায় ১০০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকে, সময় থাকে দুই ঘণ্টা ৫০ মিনিট। এটি paper based test, পরীক্ষাটি কম্পিউটারে বা অনলাইনে দেওয়া যায় না। পরীক্ষায় যে বিষয়গুলো থাকবে সেগুলো হল- Classical mechanics (20%) Electromagnetism (18%) Optics and wave phenomena (9%) Thermodynamics and statistical mechanics (10%) Quantum mechanics (12%) Atomic physics (10%) Special relativity (6%) Laboratory methods (6%) Specialized topics (9%) মোট ১০০টি প্রশ্নে পরীক্ষা হলেও এই পরীক্ষার ফলাফল অন্যান্য Standardized Test এর মতই বিশ্বব্যাপী পরীক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফলাফলের ভিত্তিতে পরিমার্জিত করে প্রকাশ করা হয়। একজন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় ২০০-৯৯০ এর মাঝে যেকোন নম্বর পেতে পারে, তবে অনুমোদিত নম্বরগুলো ১০ এর ব্যবধানে বাড়ে। অর্থাৎ, একজন শিক্ষার্থী ২০০, ২১০, ২২০ এভাবে ৯৯০ পর্যন্ত পেতে পারে। নম্বরের পাশাপাশি প্রকাশ করা হয় সকল পরীক্ষার্থীর মাঝে শতকরা কত ভাগ পরীক্ষার্থী ঐ শিক্ষার্থীর চেয়ে কম নম্বর পেয়েছে। কেন প্রয়োজন P-GRE? কত নম্বর পেতে হবে? প্রস্তুতি সম্পর্কে বলার পূর্বে বলা দরকার এই পরীক্ষাটি কেন প্রয়োজন এবং ভর্তির আবেদনপত্রে এটি কতখানি গুরুত্ব রাখে। একটি তিন ঘণ্টার বহুনির্বাচনী (MCQ) প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর তিন বছরের পড়াশোনার ব্যাপ্তি নির্ধারণ হয় না। সুতরাং P-GRE পরীক্ষার ফলাফল কোন শিক্ষার্থীর পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞানের অদ্ব্যর্থ পরিমাপ নয়। এটির প্রাথমিক প্রয়োজন হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞানের একেবারেই মৌলিক বিষয়গুলি সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থীর পরিচয় আছে কিনা এবং সমস্যা সমাধানে সে ঐ ধারণাগুলো দ্রুত চিহ্নিত ও ব্যবহার করতে পারে কিনা সেটা নির্ধারণ করা। এই পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন সমাধানের জন্য গড়ে ১.৭ মিনিট সময় পাওয়া যায়। তদুপরি, অধিকাংশ সমস্যার উদ্দেশ্যই থাকে ছোটখাটো কোন হিসাব করা অথবা মৌলিক কোন তত্ত্বের (যেমন কেপলারের তত্ত্ব অথবা পাউলির বর্জন নীতি) প্রাথমিক প্রয়োগ। সময় স্বল্পতার জন্য এই পরীক্ষায় স্বাভাবিকভাবেই বড় কোন সমস্যা সমাধান করতে হয় না। ভর্তির সময়ের অভিজ্ঞতা এবং এখানকার মাস্টার্স/পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে যা বুঝতে পারি টা হল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মনে করে- যে শিক্ষার্থী পদার্থবিজ্ঞানে যথেষ্ট ভাল, সে P-GRE তে অনেক খারাপ করবে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটা নিজস্ব কাট-অফ থাকে, কোন আবেদনকারী P-GRE তে তার চেয়ে কম পেলে সাধারণত ঐ বিশ্ববিদ্যালয় সেই শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেয় না। বিগত দুই বছর University of Texas at Austin এ এই কাট-অফ ছিল ৮৪০। সাধারণভাবে ধারণা করা যায়, মোটামুটি ভাল থেকে মধ্যম র‍্যাংকিং-এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য P-GRE তে অন্তত ৮৫০ নম্বর নিশ্চিত করতে হবে। প্রস্তুতি- কত সময় লাগবে? কী কী পড়ব? P-GRE তে ভাল করতে হলে কতদিন সময় দিতে হবে- এই প্রশ্নটা আমাকে অনেকেই করে। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন, কারণ এটা পরীক্ষার্থীর উপর নির্ভর করবে। তবে পরীক্ষার বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভূক্ত অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কেই আমাদের দেশের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বেশ ভালোভাবে শেখানো হয়। অন্তত আমাদের সময় হতো, এখনকার অবস্থা বলতে পারি না। যেহেতু পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেকে P-GRE দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী, আমি আমাদের সময়ের উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসকে রেফারেন্স ধরে আলোচনা করব। তবে উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসে পড়ানো হয়েছে বলে সব প্রশ্ন উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষার মত হবে সেটা ভাবার কোন কারণ নেই। P-GRE এর প্রশ্ন অনেক কঠিন না হলেও পরীক্ষায় যথেষ্ট ভালো করার জন্য প্রবলেম সলভিং এর অভ্যাস থাকা প্রয়োজন। এই পরীক্ষার সহজতম অংশ হচ্ছে- ক্লাসিকাল মেকানিক্স, অপটিক্স, থার্মোডাইনামিক্স এবং আপেক্ষিকতা। এগুলো মিলেই পুরো পরীক্ষার প্রায় ৪৫টি প্রশ্ন হয় এবং এসকল বিষয়ের অধিকাংশই আমাদের সময়কার উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত ছিল। ক্লাসিকাল মেকানিক্সে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মাঝে রয়েছে গতির সমীকরণ, ভরবেগ, কৌণিক ভরবেগ এবং শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি, মহাকর্ষ (কেপলারের সূত্র এবং নিউটনের তত্ত্ব), প্রবাহী বলবিদ্যা (বিশেষত প্যাসকেল এবং আর্কিমিডিসের তত্ত্ব), সরল ছন্দিত স্পন্দন (স্প্রিং এবং সরল দোলকের নীতি)। স্নাতক পর্যায়ে আলাদা করে পড়ানো হয় এমন বিষয়ের মাঝে রয়েছে Lagrangian এবং Hamiltonian formalism। এ ধরনের বিষয় থেকে প্রশ্ন মূলত কোন সিস্টেমের Lagrangian এবং Hamiltonian এবং সেখান থেকে পাওয়া গতির সমীকরণ লিখতে পারার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে। এ ধরনের বিষয় থেকে সাধারণত সর্বোচ্চ ২টি প্রশ্ন থাকে। অপটিক্স এর বড় অংশ ধরে থাকে প্রতিফলন, প্রতিসরণ, দর্পণ এবং লেন্সের বৈশিষ্ট্য। তরঙ্গ সংক্রান্ত বিষয়ের মাঝে তরঙ্গের প্রাথমিক ধারণাগুলো (তরঙ্গদৈর্ঘ্য, তরঙ্গবেগ, পর্যায়, কম্পাঙ্ক, তরঙ্গের উপরিপাতন) নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকে। Interference, Diffraction, শব্দের ডপলার ক্রিয়া- এধরনের বিষয়গুলো থেকে ১-২টি প্রশ্ন থাকতে পারে। থার্মোডাইনামিক্স এর প্রশ্নগুলোতে প্রধানত তাপগতিবিদ্যার প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র, আদর্শ গ্যাস সমীকরণ এবং আদর্শ গ্যাসের আণবিক গতিতত্ত্ব, রুদ্ধতাপীয়, সমোষ্ণ প্রক্রিয়া, কার্নো চক্র, এনট্রপি এই বিষয়গুলোই থাকে। সম্ভাব্যতার মাধ্যমে এনট্রপির ব্যাখ্যা, ম্যাক্সওয়েল-বোল্টজম্যান বণ্টন নীতি এবং ম্যাক্সওয়েল রিলেশনস- এই বিষয়গুলো থেকে P-GRE তে প্রায়শই প্রশ্ন আসে। আমাদের উচ্চ মাধ্যমিকে আপেক্ষিকতায় লরেঞ্জ রূপান্তর এবং লরেঞ্জ রূপান্তর ব্যবহার করে দৈর্ঘ্য সংকোচন, কাল দীর্ঘায়ন- এই বিষয়গুলো পড়ানো হয়। সেই সাথে পড়ানো হয় ভর-শক্তি সমীকরণ। এগুলোর পাশাপাশি আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় এবং আলোর ডপলার ক্রিয়া পড়তে হবে। ১৫টি প্রশ্ন থাকে Specialized topics এবং Laboratory Methods থেকে। Specialized topics ব্যাপারটি খুব সুসংজ্ঞায়িত নয়, তবে কিছু বিষয় জানা এবং বুঝে রাখাটা এক্ষেত্রে বেশ ফলপ্রসূ একটা কৌশল। এরকম একটি বিষয় হল Standard Model of Particle Physics। স্ট্যান্ডার্ড মডেলের মৌলিক কণিকা এবং তাদের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে প্রায়শই কিছু প্রশ্ন আসে। সেই সাথে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ বিষয়ে হাবলের নীতি, কৃষ্ণবিবরের ঘটনা দিগন্তের ব্যাসার্ধ, সমসাময়িক কিছু গবেষণা সম্পর্কে ধারণা রাখা যেতে পারে। Laboratory Methods এ সাধারণত গ্রাফ থেকে কোন তথ্য বের করা কিংবা ইন্টারপোলেশন, পরীক্ষাগারে ব্যবহার করা প্রচলিত যন্ত্রপাতি সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন এগুলো থাকতে পারে। এই পরীক্ষার অবশিষ্ট ৪০টি প্রশ্নের জন্যই সবচেয়ে বেশি পড়াশুনা করতে হয়। Electromagnetism এর প্রশ্নগুলো অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন বিষয় থেকে আসতে পারে। কিছু প্রশ্ন আসে সার্কিট বিষয়ক। আমি এই বিষয়ের জন্য যেকোন একটি স্ট্যান্ডার্ড পাঠ্যবই থেকে মৌলিক বিষয়গুলো পড়ে ফেলাটার পক্ষপাতী। এই বিষয়গুলোর মাঝে Electrostatics, Magnetostatics, Electric and magnetic fields in matter, Maxwell’s Equations, EM waves and radiation অবশ্যই থাকতে হবে। অনেকেই তড়িৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রের লরেঞ্জ রূপান্তর পড়তে বলেন, তবে আমি সেটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে David Griffiths এর Electrodynamics বই থেকে ১-৭, ৯, ১১ এই অধ্যায়গুলো পড়েছিলাম। তবে অন্যান্য পাঠ্যবইও ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরদিকে কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং অ্যাটমিক ফিজিক্স আলাদা আলাদা বিষয় হিসেবে উল্লেখ থাকলেও আসলে এই দুই অংশ মিলিয়ে থাকা ২২টি প্রশ্ন কোয়ান্টাম মেকানিক্স থেকেই আসে। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রাথমিক প্রয়োগগুলো (কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ, ফটো-ইলেকট্রিক ইফেক্ট) সম্পর্কে ধারণা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি, বোরের Correspondence Principle, সহজ কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল সিস্টেমের জন্য শ্রোডিঞ্জার সমীকরণের সমাধান, Wave function এর normalization, wave function থেকে সম্ভাব্যতা নির্ণয়- এই বিষয়গুলো থেকে স্বাভাবিকভাবেই অনেকগুলো প্রশ্ন থাকে। পাউলির বর্জন নীতির ধারণা ব্যবহার করতে হয় এমন সমস্যাও থাকতে পারে। মাঝে মাঝে Perturbation theory থেকেও কিছু প্রশ্ন থাকে। অ্যাটমিক ফিজিক্সের প্রশ্নগুলো করা হয় রাদারফোর্ড এবং বোরের পরমাণু মডেলের ধারণাগুলোর উপর ভিত্তি করে। বিশেষত, রাদারফোর্ড মডেলের সীমাবদ্ধতা এবং বোর মডেলের স্বীকার্য এবং বোর মডেল থেকে পাওয়া হাইড্রোজেন এবং হাইড্রোজেনের মত অন্যান্য এক ইলেক্ট্রন বিশিষ্ট পরমাণুগুলোর বিভিন্ন শক্তিস্তরের ব্যাসার্ধ ও শক্তির মান- এগুলো প্রায়শই পরীক্ষায় থাকে। অপেক্ষাকৃত কঠিন বিষয়গুলোর মাঝে শিখতে হবে হাইড্রোজেন পরমাণুতে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ এবং স্পিন কীভাবে হিসাব করা হয় এবং মোট কৌণিক ভরবেগ (স্পিন + সাধারণ কৌণিক ভরবেগ) কীভাবে হিসাব করতে হয়। এই বিষয়গুলো সাধারণত কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর যেকোন প্রাথমিক কোর্সেই পড়ানো হয়। কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং অ্যাটমিক ফিজিক্স এর সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য David Griffiths এর Quantum Mechanics বইটা বেশ ভাল। এই বই থেকে প্রথম তিনটি অধ্যায় খুব ভালভাবে পড়তে হবে। চতুর্থ এবং পঞ্চম অধ্যায় থেকে মৌলিক ধারণাগুলো বোঝা এবং ছোট ছোট সমস্যা সমাধানে জোর দিতে হবে।


প্রস্তুতির সাধারণ কৌশল যেকোন পরীক্ষায় ভালো করার জন্য তার বিষয়বস্তু ভালোভাবে রপ্ত করা আবশ্যক। P-GRE পরীক্ষাও ব্যতিক্রম নয়। তবে এই পরীক্ষার বিষয়বস্তু অনেক বড় পরিসরে বিধৃত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কিছু সহজ ও স্বাভাবিক কৌশল বেশ ভালো কাজে আসে।
(১) সাধারণ জ্ঞান এবং উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ- P-GRE তে এমন অনেক প্রশ্নই আসে যেগুলো কিছুটা সাধারণ জ্ঞান এবং উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ করেই উত্তর করা যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০০৮ সালের পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন এসেছিল- ডি ব্রগলির তত্ত্ব অনুসারে কোন পদার্থের তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং ভরবেগ কোন ধ্রুবকের মাধ্যমে সম্পর্কিত? যেহেতু ডি ব্রগলির সমীকরণটি কোয়ান্টাম ফিজিক্সের একটি সমীকরণ এখানে প্লাঙ্কের ধ্রুবক অবশ্যই থাকবে। এটুকু সাধারণ জ্ঞানের ব্যবহারই যথেষ্ট।
(২) একক/মাত্রা সম্পর্কে ধারণা- বিভিন্ন রাশির এবং ধ্রুবকের একক সম্পর্কে ধারণা থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, অনেক সমস্যা সমাধানের জন্য এটুকু জ্ঞানই যথেষ্ট। এই সংক্রান্ত কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া যায়- * প্লাঙ্কের ধ্রুবক এবং কৌণিক ভরবেগের একক অভিন্ন (ঐতিহাসিকভাবে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল। এটার জন্যই নীলস বোর ধারণা করেছিলেন যে পরমাণুতে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ কোয়ান্টাইজড হবে) * kT (বোল্টজম্যান ধ্রুবক*তাপমাত্রা), qV (চার্জ*ভোল্টেজ), mv^2 (ভর*বেগ^2), mas (ভর*ত্বরণ*দূরত্ব) এ জাতীয় রাশিগুলো কাজ/শক্তি নির্দেশ করে * RC (রোধ*ক্যাপাসিটেন্স), L/R (ইন্ডাকটেন্স/রোধ) এগুলোর একক সময়ের একক সমান * একই সমীকরণের ভিন্ন ভিন্ন পদের একক একই হবে * কোন সংখ্যার সূচকে বা লগারিদমের ভেতরে যেসকল সংখ্যা থাকে তারা এককহীন হয়।
(৩) অর্ডার অফ ম্যাগনিটিউড এবং আসন্ন মান নির্ণয় (order of magnitude calculation and approximations)- P-GRE পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। যে সকল সমস্যায় কোন মান নির্ণয় করতে হয় সেখানে অধিকাংশ সময়ই তাই অর্ডার অফ ম্যাগনিটিউড হিসাব করতে হয়। অর্ডার অফ ম্যাগনিটিউড হিসাবের সমস্যাগুলোতে সাধারণত কোন সমস্যার সমাধানে 10 এর কত সূচক (power) থাকবে সেটা মুখ্য হয়। এই ধরনের সমস্যা পেলে প্রাথমিক প্রচেষ্টা হওয়া উচিত সমীকরণে থাকা বিভিন্ন রাশি থেকে পাওয়া 10 এর সূচকগুলোকে আলাদা করে ফেলে হিসাব করা। অনেক সময় এটুকু করলেই আন্দাজ করে ফেলা যায় সঠিক উত্তর কোনটি হবে। এরপরেও যদি হিসাব করার প্রয়োজন হয় তাহলে আসন্ন মানের ব্যবহার করা যায়। আসন্ন মানের ব্যবহার করেও অনেক সমস্যার সঠিক উত্তর বের করে ফেলা যায়। কিছু প্রচলিত approximation হল- * π = 22/7 অথবা π = 3 * sqrt(2) = 1.4, sqrt(3) =1.7 * e = 2.7, 1/e = 0.37 * ln 2 = 0.69
(৪) কিছু বহুল ব্যবহৃত মান মনে রাখা- P-GRE পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সাথে সাধারণত একটি অতিরিক্ত পৃষ্ঠা দেওয়া হয়, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সব ধ্রুবক এবং প্রয়োজনীয় কিছু একক রূপান্তরের সূত্র দেওয়া থাকে। সুতরাং এগুলো মুখস্থ করার সুবিশেষ প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া যথেষ্ট অনুশীলন করলে অধিকাংশ প্রয়োজনীয় ধ্রুবকের মান এমনিতেই মনে থাকে। তবে এগুলোর বাইরে কিছু বিশেষ, বহুল ব্যবহৃত রাশিমালার মান মনে রাখা বেশ সুবিধাজনক এবং ক্ষেত্রবিশেষে বেশ কাজে আসতে পারে। যেমন- * হাইড্রোজেন পরমাণুতে ইলেকট্রনের প্রথম কক্ষপথের শক্তির মান -13.6 eV, n তম কক্ষপথে এই শক্তির মান হয় -13.6/n^2 * বোর ব্যাসার্ধ- হাইড্রোজেন পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটনের মাঝে ন্যূনতম দূরত্ব: 0.529 অ্যাংস্ট্রম। এটি প্রথম কক্ষপথের ব্যাসার্ধ। n তম কক্ষপথের ব্যসার্ধ হবে 0.529*n^2 অ্যাংস্ট্রম। * রিডবার্গ ধ্রুবক এবং রিডবার্গ সমীকরণ * একটি সুবিধাজনক কম্পাঙ্কের জন্য একটি ফোটনের শক্তির মান eV এককে মুখস্থ করে যাওয়া যেতে পারে। এতে অন্যান্য কম্পাঙ্কের জন্য ফোটনের শক্তির মান বের করা সহজ হয়ে পড়ে, প্লাঙ্কের ধ্রুবক ব্যবহার না করে সমানুপাতের সম্পর্ক ব্যবহার মান করেই বের করে ফেলা যায়। (৫) সীমাস্থ মান নির্ধারণ- যেসকল প্রশ্নে কোন রাশির সঠিক সমীকরণ নির্ধারণ করতে দেওয়া হয় সেসকল ক্ষেত্রে অনেক সময় সীমাস্থ মান নির্ধারণ করাটা একটি ফলপ্রসূ কৌশল হতে পারে। সীমাস্থ মান বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে- সমীকরণে কোন একটি রাশির মান একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা বা অপর কোন রাশির মানের কাছাকাছি হলে, বা কোন একটি রাশির মান অনেক বড় হয়ে গেলে ঐ রাশিটির মান কেমন হওয়া উচিত সেটা বিশ্লেষণ করা। প্রশ্নে প্রদত্ত অপশনগুলোর মাঝে যেগুলো সেই সীমাস্থ মানের মত আচরণ করে না, সহজেই বলে দেওয়া যায় সেগুলো সঠিক উত্তর নয়।
উপরের কৌশলগুলো কীভাবে ব্যবহার করা যায় সেটা একটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করছি। ২০০৮ সালের পরীক্ষায় নিচের প্রশ্নটি এসেছিল, আমি এখানে অপশনগুলো একটু পরিবর্তন করে এটাকে আরেকটু ‘কঠিন’ করে দিচ্ছি- A thermodynamic system, initially at absolute temperature T1 , contains a mass m of water with specific heat capacity c. Heat is added until the temperature rises to T2. The change in entropy of the water is- (A) 0 (B) T2 – T1 (C) mcT2 (D) mc ln(1-T2/T1) (E) mc ln(T2/T1) প্রথমত, এখানে অপশন (A) অবান্তর কারণ তাপ গ্রহণ করার মাধ্যমে সিস্টেমটির এনট্রপি বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, অবশিষ্ট অপশনগুলোর মাঝে সঠিক একক আছে কেবল অপশন (D) এবং (E) এর। তৃতীয়ত, এখানে সীমাস্থ মানের ধারণাও ব্যবহার করা যায়। যদি T2 আর T1 সমান হয়ে যায় তাহলে এনট্রপির পরিবর্তন শূন্য হবে। (D) এবং (E) এর মাঝে কেবল (E) এর ক্ষেত্রে এই ধারণা সঠিক থাকে। সুতরাং (E) সঠিক উত্তর।
P-GRE এর জন্য বই এবং অন্যান্য রিসোর্স সাধারণ GRE এর প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট বই এবং অন্যান্য রিসোর্স পাওয়া গেলেও P-GRE এর প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট বই বাজারে পাওয়া যায় না। অল্প যে কয়েকটি বই আছে তার মাঝে একটি বইয়ের কথা উল্লেখযোগ্য-Kahn এবং Anderson এর Conquering the Physics GRE। বইটি পদার্থবিজ্ঞান শেখার জন্য মোটেই ভাল নয়, তবে মোটামুটি একটা ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি হবার পর P-GRE প্রস্তুতির জন্য বেশ উপযোগী। এই বইটিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার পাশাপাশি অনুশীলনী হিসেবে বেশ কিছু সমস্যা দেওয়া আছে। তিনটি পূর্ণাঙ্গ Practice Test দেওয়া আছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে, বইটিতে যে সমস্যাগুলো দেওয়া আছে সেগুলো P-GRE পরীক্ষার জন্য প্রাসঙ্গিক এবং মূল পরীক্ষার কাছাকাছি মানের। ETS বিভিন্ন সময়ে পাঁচটি মূল পরীক্ষার প্রশ্ন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। অনেকের মতে, এগুলোই P-GRE পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় resource এবং এই পাঁচটি প্রশ্নপত্র সমাধান করে যাওয়াটাই যথেষ্ট। এই প্রশ্নগুলো অনলাইনে বেশ সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। অনলাইনে physicsgre.com একটি উল্লেখযোগ্য ফোরাম। শুধুমাত্র P-GRE এর জন্য নয়, পদার্থবিজ্ঞানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং আনুষঙ্গিক আলোচনার জন্যও খুব ভাল একটি প্লাটফর্ম এই ফোরামটি। অদূর এবং সুদূর ভবিষ্যতে যারা P-GRE পরীক্ষা দেবে তাদের সবার প্রতি শুভকামনা রইল।
পুনশ্চ- ## আমার বন্ধু মঈনুল হোসেন রাহাতের (বর্তমানে University of Florida তে পদার্থবিজ্ঞানে PhD করছে) মতে মধ্যম মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য P-GRE তে ৮০০ এর বেশি স্কোর থাকলেই চলে। আমি ওর সাথে সম্পূর্ণরূপে দ্বিমত পোষণ করছি না। তবে আমার কাছে threshold হিসেবে ৮৫০ অধিকতর নিরাপদ বলে মনে হয়েছে। ## রাহাত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাকে জানিয়েছে, যেটা আমি আগের পর্বে উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। Laboratory methods এর মাঝে error analysis বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের কারিকুলামে এই বিষয়টি নিয়ে খুব কম আলোচনা করা হয়, কিন্তু যেকোন Physics experiment এ margin of error একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। ## প্রথম কমেন্টে আমি একটি Dropbox link শেয়ার করেছি। এটাতে ETS কর্তৃক প্রকাশিত বিগত পাঁচটি প্রশ্ন এবং error analysis এর উপর একটি ছোট টিউটোরিয়াল আপলোড করা আছে। ## সাম্প্রতিক সময়ের পরীক্ষাগুলোর difficulty level ২০০১ এবং ২০০৮ সালের প্রশ্নগুলোর মতই, আগের প্রশ্নগুলোর চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ।
Writter: Avik Roy
Lecturer, BUET
(পেজের লেখা বা সেবা যদি ভালো লাগে অথবা কোনভাবে আপ্নারা উপকৃত হন, তাহলে ৫* রিভিউ দিয়ে মতামত জানান। এটা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। পেজের লেখাগুলো সবার আগে পেতে ফলোয়িং অপশনে গিয়ে সী ফার্স্ট সেট করুন। নিয়মিত লাইক না দিলে লেখা আ[পনার সামনে যাবেনা। কমেন্ট এ লেখা সম্পর্কে আপনার মতামত জানান। গুরত্বপূর্ণ লেখাগুলো শেয়ার করে নিজের টাইমলাইনে রাখুন) Write Review here - https://www.facebook.com/pg/EngineersDiary16/reviews/?ref=page_internal join our Community group https://www.facebook.com/groups/CEESBD/ Science Study- https://www.facebook.com/groups/ScienceStudy.EngineersDiary/ Join for admission Query https://www.facebook.com/groups/EMV17/ visit our website- https://engineersdiarybd.blogspot.com/ )

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.