এই না চেনার ব্যাপারটা থেকেই কুয়েটের পোলাপাইনদের মধ্যে ফোকাসে আসার ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়।
আচ্ছা, বাংলাদেশের সর্বচ্চ সম্মানিত শিক্ষা প্রতিস্থানগুলির মধ্যে আছে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকার বাইরের কথা বাদ দিলাম।
ঢাকার মধ্যের কয়জন মানুষ বলতে পারবে বাংলাদেশের এই একমাত্র মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টার নাম কি আর কোথায় অবস্থিত? ৯০% লোক বলতে পারবে না। তাতে কি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান এতটুকু কমে গেছে?
দেশে ছেলেমেয়েদের ছোটকাল থেকে স্বপ্ন পাইলট হওয়ার, অনেকের লাইফেই ড্রিম ক্যারিয়ার হচ্ছে পাইলট। দেশের কয়জন বলতে পারবে দেশের টপ মোস্ট পাইলট ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের নাম কি?
এখন সবাই জানে মেরিনে জব করা বিশাল ব্যাপার, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার বিশাল কিছু, কিন্তু মানুষকে বলতে বলেন তো দেশের এক নাম্বার মেরিন ইন্সটিটিউট কোথায় এবং নাম কি? কেউ বলতে পারবে না।
যেসব সাধারণ মানুষের কুয়েট চেনা না চেনা নিয়ে কিছুই এসে যায়না তাদের কথায় মন খারাপ করে বসে থাকার এই হীনমন্যতার কোন মানে হয়না।
আপনি দেখেন জব সেক্টরের লোকজন কুয়েট চেনে কিনা। ভালো মতই চেনে। অন এভারেজে বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ারিং জব মার্কেটে এখন বুয়েটের চেয়েও কুয়েটের স্টুডেন্টদের প্রিফারেন্স বেশী, দেশে এক নাম্বার প্রায়োরিটি বলা যায়।
.
.
দেশের সবথেকে বড় বড় ইঞ্জিনিয়ার বেইসড কোম্পানি এখন কুয়েটিয়ানরাই চালাচ্ছে।
.
.
হায়ার স্টাডির ক্ষেত্রে বুয়েটের দীর্ঘ্য সময় ধরে লম্বা এলামনাই চেইন থাকাতে কুয়েট এখনো ওই পজিশন ধরতে পারে নাই কিন্তু সেখানেও বুয়েটের পর পরেই কুয়েটের প্রিফারেন্স আছে।
.
.
আপনি চিন্তা করেন, ঢাকা থেকে এতো দূরে হওয়া নিতান্ত নতুন একটা ভার্সিটির এত কম সময়ে এতো নামডাক কিন্তু মুখের কথা না।
.
.
.
যারা কুয়েট সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানে তারা কিন্তু আপনি কুয়েট থেকে পড়ে এসেছেন শুনলে কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসবে।
.
.
.
মনে আছে, জবের ভাইভা দিতে গিয়ে যখন কোন একটা প্রস্নের উত্তর পারতাম না তখন শুনতে হত আপনি কুয়েটের স্টুডেন্ট হয়ে এই প্রস্নের উত্তর পারছেন না? মানে, যায়গা মতো সবাই ভালো করেই জানে কুয়েট কি জিনিস।
.
.
.
পাশ করার পর জব পাওয়ার পার্সেন্টেজ হিসাব করলে কুয়েট মনেহয় পৃথিবীর টপ মোস্ট ভার্সিটিগুলিকেও টপকাবে।
.
.
.
আপনি কুয়েটে পড়েছেন মানে আপনার জন্য জব রেডি, জব আপনি একটা পাবেনই। হয়তো জবের বেনিফিট, স্যালারি, পরিবেশ নিয়ে আপনার আপত্তি থাকতে পারে কিন্তু করতে চাইলে বেকার আপনাকে থাকতে হবেনা।
.
.
এইটা যে কতবড় আশির্বাদ সেটা নর্মাল ভার্সিটি থেকে বের হওয়া স্টুডেন্টদের সাথে কথা বললে বুঝবেন।
.
.
ঢাকা ইউনিভার্সিটির নাম তো এক বাক্যে সবাই চেনে। সেখানকার স্টুডেন্টদেরও (সংখ্যায় কম যদিও) দেখেছি জাস্ট কোনরকম একটা জব পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর জুতা ক্ষয় করতে।
.
.
.
প্রাইভেট পড়িয়ে বছরের পর বছর পার করতে। ৮ হাজার টাকা স্যালারিরও একটা জব পেলে এদের অনেকে বর্তে যায়, কিন্তু পাচ্ছে না।
.
.
.
ঢাকা ইউনিভার্সিটির সাথে তুলনা করছি না, জাস্ট উদাহরণ হিসেবে বললাম।
.
.
.
ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে এই বছর দেশে রিসার্চ আর্টিকেল পাবলিকেশনে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কুয়েট টপে।
.
.
.
ইদানিং দৈনিক পত্রিকাগুলিতে অন্য ভার্সিটিগুলির চেয়ে তুলনামূলক কুয়েটকে নিয়েই বেশী পজিটিভ প্রতিবেদন হতে দেখি, এমনকি বুয়েট থেকেও বেশী।
.
.
এখন এরপরেও কুয়েটকে কেউ না চিনলে সেটা তার ব্যাক্তিগত ব্যর্থতা।
.
.
.
বুয়েট দীর্ঘদিন ছিলো দেশের একমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং মানেই দেশে বুয়েট বুঝতো। সেটাও চিনতে মানুষ সময় পেয়েছে প্রায় ৪০ বছর।
.
.
.
সেই তুলনায় কুয়েট নিতান্তই নতুন।
একটু কম চিনবে সেটা স্বাভাবিক নয় কি?
.
.
কিন্তু সাধারণ মানুষের চেনা না চেনা দিয়ে আসলেই দিন শেষে কিছু এসে যায়না।
.
.
কুয়েট থেকে পাশ করে একসময় আপনি হবেন দেশের প্রতিষ্ঠিত কম্পানিতে জব করা প্রতিষ্ঠিত ইঞ্জিনিয়ার। কুয়েটের গাধা-গরুগুলিও কীভাবে কীভাবে ৫-৬ বছর পর বড় বড় কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার বেঞ্চের উপরে চলে যায়। এইটাই কুয়েটের সাফল্য।
.
.
.
আদার ব্যাপারি জাহাজ চিনলো না তাই নিয়ে জাহাজের ব্যাবসায়ী কখনো মন খারাপ করে না, কখনই না।
.
.
আরেকটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করি। আমার এক ফ্রেন্ড আছে SSF এ। ওইদিন হাঁসতে হাঁসতেই বলতেছিলো মানুষজনকে যদি বলি SSF এ আছি হা করে তাকায় থাকে, কেউ চেনে না। পরে আলাদা করে র্যাঙ্ক বলতে হয়। তো কুয়েটকে সব ক্লাসের সব মানুষের চিনতে হবে কেন?
.
.
Jabed Perves
ME 2k8
Research Assistant at International Islamic University Malaysia