বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস দের জন্য কিছু কথা।
আপনারা যে যেই সাবজেক্টেই পড়েন না কেন অথবা যে বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়েন না কেন, ভার্সিটির প্রথম দিন থেকে
শুরু করে চার বছরের ভেতর নিচের প্রস্তুতিগুলো নিয়ে নিবেন -
১) IELTS এবং TOEFL কোর্স
৩) বিসিএস এর প্রস্তুতি
এবং
৪) কিছু টাকা সঞ্চয় করে রাখা।
দেশ এবং বিদেশ, দুজায়গাতেই নিজের ক্যারিয়ার করতে এসব কাজে আসবে। যে যে বিষয়েই পড়েন না কেন, একটা
সময় আসে যখন অনেকেই সরকারি চাকরীর
প্রতি আকৃষ্ট হয়। পাশ করার পর এসব প্রস্তুতি শুন্য থেকে শুরু
করতে যেয়ে বেশিরভাগই অধৈর্য হয়ে পড়েন। বিসিএস এর কোচিং ধীরে সুস্থে হেসে খেলে ছাত্র জীবনেই
করে রাখলে এটি আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করবে এবং অন্যদের চেয়ে কমপক্ষে এক বছর এগিয়ে রাখবে।
অন্য যে দেশেই উচ্চশিক্ষার্থে যেতে চান IELTS লাগবে। আর
আমি এখন পর্যন্ত দেখিনি যে কেউ GRE /GMAT এ ভালো মার্কস পেয়েছে অথচ আমেরিকাতে স্কলারশিপ পায়নি।
তবে এমন অনেককেই দেখেছি যারা পাশ করার পর দিশেহারা
হয়ে যায়। রোজগার করবে নাকি বিসিএস কোচিং করবে নাকি
Ielts দিবে। পরে দেখা যায় কিছুই ঠিকমতো করতে পারেনা।
তাই পাশ করার পর সীমিত সময়ে এত কিছু করার প্রেশার নেয়ার চাইতে ধীরে সুস্থে চার বছর ধরে এসব প্রিপারেশন /কোচিং one by one করে ফেলুন।
আপনি হয়তো আপনার ফিউচার প্ল্যান ঠিক করে রেখেছেন।
কিন্তু সবকিছু এক প্ল্যান অনুযায়ী নাও ঘটতে পারে। আপনার
নিজের ক্যারিয়ার প্ল্যান নিয়ে দৃস্টিভংগীও বদলে যেতে পারে। এসব প্রস্তুতি আপনার সব পথ / ভবিষ্যত সুযোগ / স্বপ্নজগৎ
খোলা রাখবে।
আরেকটা কথা। টাকা জমান। চার বছর পরের জন্য। এক লাখ
টাকা জমান। না পারলে অন্তত পঞ্চাশ হাজার। প্রতি মাসে
এক হাজার টাকা করে চার বছর।মেয়াদী ব্যাংক ডিপিএস
খোলা কারো জন্যই খুব কষ্টেরর হওয়ার কথা না। কিন্তু এই
জমানো টাকাই আপনার একসময় অনেক কাজে আসবে। পাশ করার পর দেশের বাইরে যাওয়া প্রসেস করতে টাকা লাগে। অনেকের পাশ করার পর বাসা থেকে হঠাৎ পকেট মানি পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পাশ করা আর ক্যারিয়ার শুরুর
মাঝখানের ক্রাইসিস সময়টাতে এই জমানো টাকাটা কাজে আসবে।
চার বছর অনেক সময়। হঠাৎ করে পরিবারের আর্থিক সমস্যা হতে পারে। জমানো টাকা খারাপ সময়ে আপনার পড়াশুনা /
ক্যারিয়ার স্ট্রাগল নির্বিঘ্ন রাখবে। মনে রাখবেন, টাকা অনেক বড় ফ্যাক্টর, টাকা থাকলে আত্নবিশ্বাস থাকবে, না থাকলে বাধা বিপত্তি।
........................
এবার ভার্সিটি জীবন ও পরবর্তী সময়
নিয়ে কিছু বলিঃ
১) কখনো দিশেহারা হবেন না, কোন ব্যাপারে পেইন নিবেন না। পেইন / স্ট্রেস / টেনশন নিয়ে কি করতে পারবেন বলেন। এসব নিয়ে কখনো কিছু করতে পারবেন না। অযথা মূল্যহীন /
লাভহীন ঝামেলা আর কস্ট সহ্য করবেন মাত্র।
২) স্কুল কলেজে সীমিত গন্ডির ভেতর থেকে মানুষজন দেখেছেন। কিন্তু মানুষ কয় প্রকার ও কি কি তা দেখবেন এই
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে। হরেক রকম মানুষ নানা।ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে আপনার ক্লাসমেট / পরিচিত বন্ধু
হবে। সবাইকে দেখুন, পর্যবেক্ষণ করুন, বুঝুন, শিখুন। কিন্তু অবশ্যই নিজের জীবন চালাবেন পরিবার ও ধর্ম থেকে পাওয়া নৈতিক বোধজ্ঞান থেকে। তাহলে কখনো বিপথগামী হবেন না।
৩) কিছু বন্ধু গাড়ি চড়ে আসবে। হাজার হাজার টাকা উড়াবে।
আইফোন আর লেটেস্ট ল্যাপটপ চালাবে। এসব দেখে হায় হুতাশ করবেন না। যাদের এসব আছে তা তাদের ভাগ্য। তাদের প্রতি মাশা- আল্লাহ বলুন। আর নিজের প্রতি আলহামদুলিল্লাহ্ বলে আপনি নিজের ভাগ্য নিজে গড়ুন।
৪) পাশ করার পর বন্ধু / পরিচিতদের সাফল্য দেখে আপসেট হবেন না। টেনশন করবেন না। হিংসা তো অবশ্যই না। আপনার
পরিচিতদের ভেতর কেউ আমেরিকার প্রেসিডেন্টও হয়ে যেতে পারে, আবার কেউ ভিক্ষুকও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা
হচ্ছে-যে প্রেসিডেন্ট হবে সেও আপনার কোন কাজে আসবে না, আর যে ভিক্ষুক হবে আপনিও তার তেমন কোন কাজে হয়তো আসবেন না।
তাই অন্যদের প্রতি শুভকামনা রাখুন আর নিজের যোগ্যতা দিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে সামনে অগ্রসর হোন।
আসলে ইয়াংদের পরামর্শ দেয়ার কিছু নেই। নবপ্রজন্ম নিজেই
নিজের জয়ের পথ খুঁজে নেয়। তবু কিছু কথা বললাম মাত্র।
সবাইকে শুভকামনা!