বিদেশে উচ্চশিক্ষা: জেনে নিন করণীয় ( শেষ পর্ব)


বিদেশে কেন পড়তে যাবেন তা তো ঠিক করা হয়ে গেল, সেই সাথে জানা হয়ে গেল পরীক্ষা সম্পর্কেও। এখন তাহলে কী কর‍তে হবে? কী আর করতে হবে, প্লেনের টিকিট কেটে উড়াল দিতে হবে! হ্যাঁ, তা তো বটেই! কিন্তু এই উড়াল দেওয়ার আগের কিছু কাজও তো সেরে নিতে হবে। যেমন: পাসপোর্ট তৈরি, ভিসা সংগ্রহ, ক্রেডিট ট্রান্সফার ইত্যাদি। তাহলে চলুন ধারাবাহিকভাবে সেগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

আবেদন এবং ভর্তি প্রসেসিং:
নির্দিষ্ট দেশের বাছাইকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য প্রথমে ভর্তি তথ্য, প্রসপেক্টাস ও ভর্তি ফরম চেয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র কুরিয়ার করে, ফ্যাক্স বা ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো যায়। তবে বর্তমান যুগের সাথে তাল মেলাতে ই-মেইলে পাঠানো ভাল। এতে করে জিনিসটা বেশি সুরক্ষিত থাকে। এখানে এরকম আবেদনপত্রের একটি নমুনা দেয়া হল-

ক্রেডিট ট্রান্সফার:
আমার এক বোন দেশেরই এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানের উপর মাস্টার্স করছে। কিন্তু সে এখন চাচ্ছে এই বিষয়ের উপর বাইরের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করতে। সেক্ষেত্রে দেশে সম্পন্নকৃত কোর্সটির ক্রেডিট সমূহ গ্রহন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের নিকট অব্যাহতি পত্র দাবি করতে পারেন। আর এটাকেই বলা হয় ক্রেডিট ট্রান্সফার।
আপনার আগে থেকে করা কোর্সটির জন্য কতটুকু ক্রেডিট পাবেন তা নির্ধারন করবে ঐ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। আপনাকে কিছু কাগজ পত্রের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে যে আপনার করা কোর্সটি কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করা এবং এই বিষয়সমূহ বিদেশের ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভূক্ত বিষয়টির অনুরূপ। ক্রেডিট ট্রান্সফারের জন্য যেসকল কাগজ পত্রের প্রয়োজন-

1.একাডেমিক সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, প্রত্যয়নপত্র।
2.কোর্সের আউটলাইন এবং পাঠ্যতালিকা।
3.কোর্স লেভেল সম্পর্কিত তথ্যাদি।
4.কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদ কতৃক সুপারিশনামা।


5.কোর্স এসেসমেন্টের পদ্ধতি (পরীক্ষা, রচনা, প্রজেক্ট ওয়ার্ক ইত্যাদি)।
6.গ্রেডিং সিস্টেম সংক্রান্ত তথ্য।
7.কোর্সের মেয়াদ, লেকচার-ঘন্টা, ল্যাবরেটরিতে কাজের ঘন্টা, ফিল্ডওয়ার্ক ইত্যাদি।


প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ:
বিদেশে পড়তে যেতে চাইলে প্রথমেই দেখতে হবে আপনার সব প্রয়োজনীয় একাডেমিক কাগজপত্রসহ যাবতীয় ডকুমেন্টস ঠিকঠাক আছে নাকি। কোনো ডকুমেন্টস বাদ পড়ে গেলে তা বানিয়ে বা সেই সংক্রান্ত অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে৷ এক্ষেত্রে সকল কাগজপত্র ইংরেজি ভাষায় হতে হবে। ইদানিং বোর্ড অফিস বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই পরীক্ষা সনদপত্র এবং মার্কশিটগুলো ইংরেজিতে দেওয়া হয়। তবে যে সব কাগজপত্র ইংরেজিতে করা নেই সে সব ডকুমেন্টস অনুবাদ করিয়ে নিতে হবে।


এক্ষেত্রে দুইভাবে অনুবাদ করা যায়। বোর্ডের একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমান ফি বাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জমা দিয়ে শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদপত্র ও নাম্বারপত্রের অনুবাদ কপি তোলা যায়। তবে পূর্বের মূলকপি বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জমা দিতে হবে। এটাই হচ্ছে সনদপত্র ইংরেজি ভাষায় অনুবাদের উত্তম পদ্ধতি। তবে একটু সময় বেশি লাগে বলে আপনি ইচ্ছে করলে নোটারি পাবলিক থেকেও অনুবাদ করাতে পারেন। এক্ষেত্রে পূর্বের মূলকপি এবং অনুবাদকৃত কপি একসাথে রাখতে হয়।


ঘুরে আসুন: ভুল করে আবিষ্কারের ৫টি মজার ঘটনা
ছবি এবং প্রয়োজনীয় সকল ফটোকপি অবশ্যই সত্যায়িত করে নিতে হবে। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের একটি বিশেষ শাখা থেকে সকল কাগজ পত্রের মূলকপি দেখানো সাপেক্ষে বিনামূল্যে সত্যায়িত করা যায়। এছাড়া নোটারি পাবলিক থেকেও সত্যায়িত করা যায়।


নির্দিষ্ট দেশের বাছাইকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য প্রথমে ভর্তি তথ্য, প্রসপেক্টাস ও ভর্তি ফরম চেয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র কুরিয়ার করে, ফ্যাক্স বা ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো যায়। তবে বর্তমান যুগের সাথে তাল মেলাতে ই-মেইলে পাঠানো ভাল। এতে করে জিনিসটা বেশি সুরক্ষিত থাকে। এখানে এরকম আবেদনপত্রের একটি নমুনা দেয়া হল-

To

The Americanos College,
Nicosia, Cyprus.

Sub: Application for Admission Materials.
Dear Sir:
I am Musharrat Abir, a student of Bangladesh. I have passed the H.S.C (equivalent to 12th grade education in USA) examination from Science group with good grades. Now I am keenly interested to study B.Sc at your famous college in the field of Computer Science and Engineering (CSE).

Please send me the admission form and other necessary materials as soon as possible.
Thank you.

Yours Sincerely,
Musharrat Abir.


এই নমুনা অনুযায়ী আবেদনপত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠালে তারা আপনার ঠিকানায় ভর্তির আবেদন ফর্ম ও প্রসপেকটাস পাঠিয়ে দিবে। এতে সাধারনত দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে আপনার ই-মেইল আড্রেস দিলে সেখানেও আবেদন ফরম দিয়ে দেয়। আবার কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েব সাইটে আবেদন ফরম দিয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে সেই ফাইলটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে। এরপর আবেদন ফরমটি প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে পূরণ করে প্রসপেকটাসের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও আবেদন ফি/ব্যাংক ড্রাফট কোন আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস বা রাষ্ট্রীয় ডাকের মাধ্যমে নির্দেশিত ঠিকানায় পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য যে, আবেদন ফি অফেরত যোগ্য। কোন প্রকার অসত্য তথ্য দিলে ভর্তি অনিশ্চিত বা পরবর্তীতে বাতিলের সম্ভাবনা থেকে এবং ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া ফরম পূরণের সময় কাটাকাটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ফরমটি ফটোকপি করে আগে ফটোকপি পূরণ করুন এবং এরপর সেটা দেখে মূল ফরমটি পূরণ করুন।

আবেদনপত্রের সাথে আরো যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন, সেগুলো হলো-

১. সকল একাডেমিক কাগজপত্র:
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকসহ বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র ও নম্বরপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি এবং সাবেক বা বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশপত্র।



২. ভাষাগত দক্ষতার প্রমানপত্র:
নির্বাচিত দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তানুযায়ী যে ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে সে ভাষায় দক্ষতার প্রমান স্বরূপ ভাষা শিক্ষা কোর্সের সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষার ক্ষেত্রে যদি সে দেশে যেতে চান তবে প্রথমে ইংরেজিতে দক্ষতার প্রমাণ স্বরূপ IELTS/TOEFL এর সনদপত্রের সত্যায়িত কপি পাঠাতে হবে। তবে কোন কোন দেশের ক্ষেত্রে ভাষাগত দক্ষতার সনদ পত্র লাগে না।



৩. আর্থিক সামর্থের প্রমানপত্র:
যিনি আপনার বিদেশে পড়াশোনাকালীন যাবতীয় খরচ বহন করবেন তার অঙ্গীকারপত্র, আর্থিক সামর্থের প্রমানস্বরূপ ব্যাংক গ্যারান্টিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নিজ খরচে পড়ার ক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থের প্রমানস্বরূপ স্পন্সরের নামে দেশভেদে বিভিন্ন অংকের অর্থের ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট এবং অনেক ক্ষেত্রে এ সলভেন্সি সার্টিফিকেট এর বৈধতার পক্ষে বিগত ৬ মাসের ব্যাংক লেনদেন রিপোর্টের সত্যায়িত কপি পাঠাতে হয়।



৪. আবেদন ফি-এর ব্যাংক ড্রাফট:
দেশ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে আবেদন ফি বাবদ ৭০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট পাঠাতে হয়।


রাজধানীর নাম জানাটা সাধারণ জ্ঞানের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই ১০ মিনিট স্কুলের এই মজার কুইজটির মধ্যমে যাচাই করে নাও নিজেকে! জেনে নিই রাজধানীর নাম!

ভর্তির অনুমতিপত্র পাওয়ার পর যা যা করণীয়:
ভর্তির অনুমতিপত্র বা অফার লেটার পাওয়ার পর সাধারণত অফার লেটারে বা প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত টিউশন ফি’র সমপরিমান অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে যা ভিসা ইন্টারভিউয়ের সময় দূতাবাসে দেখাতে হয় এবং ভিসা পেলে পরবর্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমা দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু টিউশন ফি বা এরকম বেশি পরিমান অর্থ ব্যাংক ড্রাফট করতে হলে ব্যাংকে নিজের নামে একটি স্টুডেন্ট ফাইল চালু করতে হবে এবং সেখান থেকেই বিদেশে পড়াশোনাকালীন সকল আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করা যাবে। আর ব্যাংকে এই স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে যা যা লাগবে-



শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রসপেক্টাস বা ভর্তির প্রমাণপত্র বা ভর্তি ফরম
পাসপোর্ট
শিক্ষাগত সনদপত্র
পুলিশ ছাড়পত্র
ছবি
বিভিন্ন ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিময় শাখাগুলোতে স্টুডেন্ট ফাইল খোলার জন্য আলাদা কেন্দ্র রয়েছে।


ভিসা সংগ্রহ:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর তাদের পাঠানো অফার লেটার বা ভর্তির অনুমতিপত্রে উল্লেখিত ডেডলাইনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানে পৌছাতেই হবে। অন্যথায় ভর্তি বাতিল হবে। তাই নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বে আপনাকে সেদেশের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও প্রায় সব নিয়মই এক রকম। কোন দেশে ভিসা পেতে হলে প্রথমে সে দেশের ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ভিসার আবেদনপত্র সরবরাহ করে থাকে। তা না হলে নির্দিষ্ট দূতাবাস থেকে ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুল ভাবে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ দূতাবাসে জমা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট দিনে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। সাধারণত ভিসার জন্য যে সব কাগজপত্র প্রয়োজন, তা হলো-


শিক্ষাগত কাগজপত্র: সনদপত্র, নম্বরপত্র, প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রশংসাপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ মূলকপি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রমানপত্র বা অফার লেটার, ভাষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র।
পাসপোর্ট: পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১ বছর থাকতে হবে এবং পেশা, জন্ম তারিখ ও অন্যান্য সকল তথ্যের সাথে শিক্ষাগত কাগজ পত্রের মিল থাকতে হবে। আপনার পাসপোর্ট করা না থাকলে পাসপোর্ট করে নিন।


আর্থিক সামর্থ্যের প্রমানপত্র: আবেদন ও ভর্তি প্রসেসিং অংশে এ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখে নিন।
ছবি: ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হবে, পরিস্কার ভদ্র পোশাকে তোলা শালীন, স্মার্ট, স্পষ্ট ও রঙিন ছবি হতে হবে।
টিউশন ফি’র ব্যাংক ড্রাফট: প্রতিষ্ঠান ভেদে টিউশন ফি ভিন্ন হয়ে থাকে।


পুলিশ ছাড়পত্র: পুলিশ ছাড়পত্রের জন্য নিজ নিজ থানায় যোগাযোগ করে একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে এটি সংগ্রহ করা যায়। তবে আপনার বিরুদ্ধে দেশ ও আইনবিরোধী কোন কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলে আপনি পুলিশ ছাড়পত্র পাবেন না।
এবার পালা উড়াল দেয়ার:


ভর্তি ও ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর প্রস্তুতি নিতে হবে বিদেশ যাত্রার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ভিসার ডেডলাইন যাই হোক না কেন, নির্দিষ্ট সময়ের ৪-৫ দিন আগেই দেশত্যাগ করা ভাল। কারণ অনেক সময় আবহওয়াজনিত ও অন্যান্য কিছু কারণে যাত্রাপথে দেরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে হাতে সময় না থাকলে বিপদ হতে পারে। তাছাড়াও কয়েকদিন আগে গেলে সেদেশের সাথে একটু একটু করে মানিয়ে নিতে সুবিধা হয়।


ঘুরে আসুন: ভুল করে আবিষ্কারের আরো ৫টি মজার ঘটনা
এয়ারপোর্টে যাওয়ার আগে আপনার পাসপোর্ট, ভিসা ইত্যাদি ঠিকঠাক আছে কী না, সেদিকে লক্ষ রাখবেন। বিদেশে অবস্থানের সময় এই সব দলিল আপনাকে অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। আপনি কোন পথে বিদেশে যেতে চান তা নির্ধারন করার সময়ও অনেকগুলো বিকল্প পথ ভাবার অবকাশ আছে। বিমানযোগে ভ্রমন করতে চাইলে মনে রাখবেন অনেক এয়ারলাইন্সে ছাত্রদের জন্য কিছু বাড়তি সুবিধা রয়েছে।

অনেকক্ষেত্রে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ছাত্রদের জন্য ডিসকাউন্ট রেটে টিকিট দিয়ে থাকে। আপনি নির্ধারিত দিনের টিকিট যদি বেশ ক’মাস আগে করেন তবে এক্ষেত্রে অনেক এয়ারলাইন্সে আপনি ছাড় পাবেন।

বিদেশে গিয়ে কোথায় থাকবেন এবং আপনার আবাসনের বিষয়টি কেমন হবে তা সম্পর্কেও খোঁজখবর নিন। স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক ইস্যুগুলো সম্পর্কে জেনে নিন। সে দেশের আইন অনুযায়ী কি করা যাবে আর কী করা যাবে না তার সম্পর্কে ধারণা থাকাটা জরুরি। আর্থিক দিকগুলো সম্পর্কেও আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। পেমেন্ট করার সঠিক সময় কবে , আর্থিক অনুদান পেয়ে থাকলে সেই টাকা হাতে পাবার ব্যাপারে কী কী করণীয় ইত্যাদি বিষয়গুলো জেনে নিন।
বিদেশে থাকার সময় কিভাবে আপনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখবেন-টেলিফোন, ডাক, ই-মেইল ইত্যাদি সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত কিনা বা তার জন্য আপনার কত খরচ হবে এ সংক্রান্ত তথ্যগুলো সংগ্রহ করুন। সর্বোপরি আপনি যে দেশে যাচ্ছেন তার ইতিহাস, রাজনীতি, আইনকানুন, রীতিনীতি প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে যতটুকু সম্ভব জেনে নিন।


সংশ্লিষ্ট দেশের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস:
যখন আপনি সংশ্লিষ্ট দেশের বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন, তখন আপনার সেদেশে আসার উদ্দেশ্য এবং সম্ভাব্য অবস্থানের সময় কাল সম্পর্কে ইমিগ্রেশন অফিসার জিজ্ঞাসা করবেন। ইমিগ্রেশন অফিসার আপনার পাসপোর্ট, ভিসা, স্বাস্থ্য ও প্রতিষেধক সনদ ইত্যাদি পরীক্ষা করবেন। তারপর তারা ঐ দেশে ঢোকার জন্য আপনাকে অনুমতি দেবেন। ঐ দেশের নিয়ম অনুসারে বা বিভিন্ন সময় অনুসারে ইমিগ্রেশনের আইনকানুন ও পদ্ধতি দ্রুত অথবা সময়সাপেক্ষ অথবা ক্লান্তিকর হতে পারে।


দীর্ঘ সময়ের বিমান ভ্রমণের পরে ইমিগ্রেশনের দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর পদ্ধতি আপনার কাছে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে। কিন্ত ধৈর্য ধরে এবং নম্র ভাবে ইমিগ্রেশন অফিসারের সকল প্রশ্নের জবাব দিন। ইমিগ্রেশনের পর আসবে কাস্টমস। কী কী জিনিস আপনি বহন করছেন তার একটি তালিকা আপনাকে কাগজে লিখতে হতে পারে। এখানেও সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর ভদ্রভাবে দিন। কাস্টমস অফিসার প্রয়োজনে আপনার ব্যাগ চেক করতে পারেন। সুতরাং তার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করুন।

আশা করি এইসব জিনিসগুলো ঠিকঠাকভাবে ফলো করলে আপনাদের বিদেশে যেয়ে খুব একটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না!

সূত্র:

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.