মেডিকেল ভর্তি টিপস
0
January 29, 2018
আমি নতুনদের বলব ‘থিঙ্ক পজিটিভ’। হবে না, পারব না—এ ধরনের কথাবার্তা ভুলে যাও। সব সময় মনে করবে, আমি পারবোই।
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ থাকে ১০০ নম্বর। এর মধ্যে জীববিজ্ঞান (প্রাণী+উদ্ভিদ)=৩০, রসায়ন (১ম + ২য়)=২৫, পদার্থবিজ্ঞান (১ম + ২য়)=২০, ইংরেজি=১৫, সাধারণ জ্ঞান=১০। এখানে নম্বর বণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে, জীববিজ্ঞান এবং রসায়নের গুরুত্ব বেশি। চলো, প্রতিটি বিষয়ে একটা ধারণা দেওয়া যাক।
জীববিজ্ঞান
প্রাণিবিজ্ঞান বই থেকেই বেশির ভাগ প্রশ্ন করা হয়। বিশেষ করে মানবদেহ অধ্যায়। তাই মানবদেহের খুঁটিনাটি তথ্যগুলো ভালোভাবে ঝালিয়ে নাও। পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে প্রতিটি তন্ত্র ও প্রক্রিয়াগুলোর ওপর। উদ্ভিদবিজ্ঞানের জন্য উদ্ভিদের ভিন্নতা, জৈবনিক প্রক্রিয়া এই বিষয়গুলো থেকেও বিগত বছরগুলোয় অনেক প্রশ্ন আসতে দেখা গেছে। কোন বিজ্ঞানী কোন মতবাদের জন্য বিখ্যাত, কোন সূত্রটি কত সালে আবিষ্কৃত হয়েছে, এসব তথ্য নখদর্পণে থাকতে হবে। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সংজ্ঞা, বইয়ের সব ছক বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য—এই অংশগুলো থেকেও প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি।
রসায়ন
রসায়ন দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্ন করা হয় বেশি। যেসব বিক্রিয়া বিজ্ঞানের নামে নামাঙ্কিত, সেসব বিক্রিয়া ও তার আবিষ্কারের সাল খেয়াল রেখো। সবচেয়ে গুরুত্ব দাও মৌলের পর্যাবৃত্ত ধর্ম, ডি-ব্লক মৌল, জৈব অ্যাসিড, হাইড্রোকার্বন ইত্যাদি বিষয়ে। রাসায়নিক বন্ধন, তড়িৎ রাসায়নিক কোষ, অ্যালডিহাইড ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ নজর দাও।
পদার্থবিজ্ঞান
পদার্থবিজ্ঞানে যেসব সূত্র খুব বেশি পরিচিত, আবার যেসব সূত্র ব্যবহার করে সহজে ছোট অঙ্ক কষা যায়, সেসব প্রশ্নই দেওয়া হয়। যেহেতু পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই, তাই এ জাতীয় প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর মনে রাখার বিকল্প নেই। সঙ্গে সঙ্গে পার্থক্য, একক মান ইত্যাদি যত ছক আছে, ভালোভাবে মনে রেখো।
ইংরেজি
Vocabulary-তে যে যত ভালো, এই অংশে নম্বর ওঠানোর সুযোগও বেশি। তাহলে Synonym-Antonym নিয়ে তেমন বেগ পেতে হবে। Right Form of Verb, Tense, Parts of speech থেকে প্রতিবছরই প্রশ্ন করা হয়। Narration, Voice, Phrase and Idioms, Preposition নিয়ে একটু বাড়তি মনোযোগ দাও।
সাধারণ জ্ঞান
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঘটে যাওয়া আলোচিত ঘটনাগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখার জন্য দৈনিক পত্রিকাগুলোয় প্রতিদিন চোখ বোলাও। এ ছাড়া ক্ষুদ্রতম, বৃহত্তম, প্রথম ও একমাত্র—এ ধরনের বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দাও। বিসিএস পরীক্ষার গত কয়েক বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে তা কাজে দেবে।
জরুরি কিছু কথা
কখনোই পড়োনি, এমন কিছু নতুন করে এখন আর পড়তে যেয়ো না। এতে সময় নষ্ট হয় বেশি। কিন্তু বিগত বছরগুলোয় বারবার এসেছে, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে থাকলে, সেগুলো আয়ত্ত করে ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। সেই সঙ্গে পড়া বিষয়গুলোও বারবার দেখো। কারণ, অস্পষ্ট ধারণা নিয়ে পরীক্ষার হলে গেলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
নিশ্চয়ই তোমাদের জানা আছে, একটা ভুলের জন্য ০.২৫ নম্বর করে কাটা যাবে। অর্থাৎ চারটি ভুল উত্তরের জন্য তুমি হারাচ্ছ একটি সঠিক উত্তরের নম্বর।
এ জন্য পরীক্ষার হলে একটু কৌশলী হতে হবে। প্রথম ২৫ মিনিটে নিশ্চতভাবে জানা ৫০-৬০টি উত্তর দাগিয়ে নিতে পারো। পরের ২০ মিনিটে মোটামুটি সহজ, এ রকম ২০-৩০টি উত্তর দাগিয়ে ফেলতে পারলে ভালো হয়। ৭০-৮০টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে ফেললে চিন্তামুক্ত লাগবে। এরপর ‘উত্তর এমন হতে পারে, কিন্তু মনে পড়ছে না’, এ রকম প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তা করার সময় পাবে। কোনো প্রশ্নের পেছনে অযথা অতিরিক্ত সময় নষ্ট করার কোনো মানে নেই। দ্রুত পরের প্রশ্নে চলে যাবে।
অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকে, প্রস্তুতির জন্য দিনে কত ঘণ্টা পড়া উচিত। আমি বলব, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না হয়, ততক্ষণ পড়া উচিত।
ভালো প্রস্তুতি নাও, ভালো পরীক্ষা দাও। সবার জন্য শুভকামনা।
লেখা: Tusar Mamun
Tags