আমি যখন কোন প্রফেসর বা অপরিচিত কাউকে ই-মেইল করি, প্রথমেই লিখি আমার নাম। আমি বর্তমানে কী করছি। কোথায় কাজ করছি। কার অধীন কাজ করিছ। আমি কোথায় আগে গবেষণা করেছি ইত্যাদি। তিন-চার লাইনে সংক্ষিপ্তাকারে নিজের পরিচয়টা উঠে আসে। অপরিচিত কাউকে ই-মেইল কিংবা টেক্সট করে কিছু জানতে চাইলে, নিজের পরিচয় দিয়ে শুরু করতে হয়। নিজের পরিচয় লিখতে গিয়ে আধা পাতা লেখা যেমন গাধামিয়তা, নিজের পরিচয় একদম না দেয়াটা আরো গাধামিয়তা।
মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগ করতে হবে। এটাই স্বাভাবিক। তবে, একটা স্টাইল ফলো করতে হয়। একটা ফরমেট শিখতে হয়। এটাও নলেজ! এই শিক্ষাটাও গুরুত্বপূর্ণ। একটা ভালো ই-মেইল বা টেক্সট লেখাও একটা কোয়ালিটি। কাউকে যদি একটা হেলায়-ফেলায় ই-মেইল করি, তাহলে সে উত্তর দিবে না। আমাকে কোন না কোনভাবে তার কাছে ক্যাচি (catchy) হতে হবে। দ্যাটস দা ওয়ে। (বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতজনের কথা আলাদা। সেখানে ফরমেট লাগে না। স্টাইল লাগে না।)। একটা ই-মেইল বা টেক্সট লেখার সময় কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখবে, একটু জেনে নাও। সেভাবে অনুশীলন করো—কাজে আসবে।
1. শুরুতেই নিজের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। তোমার নাম কী, কোথায় পড়ছো বা কাজ করছো। আগে কী করতে বা তোমার স্পেশালিটি কী ইত্যাদি। নট টু বিগ, নট টু শর্ট!
2. ই-মেইলে কাউকে সম্বোধন করার একটা ইউনিভার্সাল নিয়ম আছে। সেটা হলো, কারো "লাস্ট নেইম" ধরে সম্বোধন করা। যেমন, ডিয়ার প্রফেসর এক্স; অথবা, ডিয়ার ড. এক্স; অথবা, ডিয়ার মি./মিস এক্স। কাকে উদ্দেশ্য করে লিখছি সেটা যদি কোনভাবেই জানা না থাকে, তাহলে ডিয়ার স্যার/ম্যাডাম লিখলেই হলো। ক্ষেত্র বিশেষে শুধু হ্যালো লিখলেই হলো! (আজব আজব সম্বোধন পরিহার করো)
3. তুমি যখন কারো কাছে কিছু জানতে চাও, তোমার অভিব্যক্তিতে সিরিয়াসনেস থাকতে হবে। এটাই নিয়ম। তুমি যখন দোকানে যাও, দোকানি তোমার চেহারায় সিরিয়াসনেসটু খুঁজে। দোকানি যদি দেখে, তুমি কিনতে আসনি, ঘুরতে এসোছো সে তোমার প্রতি এটেনশন দিবে না। বি স্পেসিফিক এন্ড শো ইউর ইন্টারেস্ট সিরিয়াসলি! সারা দুনিয়াতেই এমন।
4. রেফারেন্স দাও। তোমাকে চেনে এমন কারো নাম উল্লেখ করো। তোমার কাজকে সহজে জানা যাবে এমন কিছু উল্লেখ করো। এটা হলো অথেনটিসিটি তুলে ধরার জন্য। যেমন: আমি ওমুক শিক্ষকের স্টুডেন্ট, অথবা আমি ওমুক সংগঠনে কাজ করি। ওমুক পত্রিকায় লিখি ইত্যাদি।
5. কোন ইনস্টিটিউট/ডিপার্টমেন্ট বা প্রফেসর বরাবর লিখতে গেলে আগে থেকে একটু করে জেনে নাও। কাট-কপি-পেস্ট পরিহার করাই ভালো। না হলে, একজনের ই-মেইল/টেক্সট অন্য জনকে পাঠিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। দ্যাটস ম্যাসড আপ! ("কাট-কপি-পেস্ট" ই-মেইল দেখলেই মানুষ ডিলিট করে দেয়)।
6. একটা ই-মেইল/টেক্সট লিখে কয়েকবার পড়ো। পাঠানোর পর যদি ভুল ধরা পড়ে তাহলে সারাদিন ধরে টেনশনই করা যাবে, কাজ হবে না। এখনো অনেক ই-মেইল লিখে আমি কয়েকবার পড়ি। অনেকসময় আমার স্ত্রীকে দিয়ে পড়াই। একটা ই-মেইল জীবন পর্যন্ত ঘুরিয়ে দিতে পারে। ইটস নট অলওয়েজ এ জোক! টেইক ইট সিরিয়াসলি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনলাইনে পড়ে থাকতে পারলে, আধাঘণ্টা সময় দিয়ে একটি মানসম্মত ই-মেইল/টেক্সট যদি লিখতে না পারো, তাহলে সমস্যাটা অন্যদের না!
7. একটা স্ট্যান্ডার্ড ই-মেইল কখনো একটা মহাকাব্য হয় না। হতে হয় শর্ট এণ্ড সুইট! যে জন্য ই-মেইলে তোমার সিভিটা এটাচ করে দিতে হবে। কোন কিছুর জন্য যদি আবেদন নাও করো, তবুও সিভি এটাচ করে দেয়া ভালো। এতে করে, যে রিসিভার, সে তোমার সম্পর্কে জানার ইচ্ছে হলে সিভি থেকে জেনে নিবে।
8. রিড, এন্ড রিড কেয়ারফুলি। কোনকিছু পড়ে, সেখান থেকে তথ্য নির্যাস নিতে পারা একটা যোগ্যতা। —ইটস কলড রিডিং এবিলিটি! পেইজে যাও। কী লেখা আছে ধৈর্য নিয়ে পড়ো। কয়েকবার পড়ো। তারপর স্পেসিফিক বিষয়ে আলোচনা করতে পারো।
……….
@Rauful Alam
ফিলাডেলফিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।