কমনওয়েলথ স্কলারশিপের প্রাথমিক নমিনেশন পাবার পর করণীয়

(যারা নমিনেশন পায় নি তাদের জন্য তথ্য আছে লেখার শেষের দিকে)
যেকোন স্কলারশিপের মাধ্যমে ফান্ডিং নিশ্চিত করা গেলে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, ইউসিএল বা ইমপেরিয়ালসহ শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি করার বিষয়টি অনেক সহজ। এজন্য করণীয় হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের দায়িত্বটা কমনওয়েলথ-এর ওপর ছেড়ে না দিয়ে নিজেই একটু চেষ্টা করা। বেশি কথা না বলে আমি কেবল ধাপগুলো লিখে দিচ্ছি। কোন সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকলে আমি জবাব দেবার চেষ্টা করবো।
১. অফার লেটার ফ্রম সুপারভাইজার
কমনওয়েলথ স্কলারশিপের অনলাইন পোর্টালটি পূরণ করার সময় নিজের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিতে হয়। সেখানে সুপারভাইজার এর নাম দেবার সুযোগ থাকে।
সুপারভাইজার এর কাছ থেকে অফার লেটার (বা সম্মতি) নিতে হলে আগে থেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করা আবশ্যক। সেজন্য তাদের কাছে লিখতে হবে। যেমন- কেউ যদি অক্সফোর্ডে ক্যান্সার বিষয়ক গবেষণা করতে চায় তাহলে সে এখান থেকে সব সুপারভাইজারের তথ্য পাবে-
http://www.oncology.ox.ac.uk/page/research
যার সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক তার কাছে ইমেইল করতে হবে। সেখানে লিখতে হবে- "আমি কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য প্রাথামিকভাবে নমিনেশন পেয়েছি। স্কলারশিপ-এর জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে আমি আপনার সাথে 'অমুক ক্ষেত্রে' গবেষণা করতে চাই।" তারপর কেন সে বিষয়ে গবেষণা করতে চাই সে বিষয়ে লিখতে হবে (২-৪ লাইন)। এই প্রথম ইমেইলের সাথে একটা এস.ও.পি, নিজের সিভি এবং দু'জন রেফারির নাম দিতে হবে।
এমন ধরনের ইমেইল পাঠাতে হবে কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ জন সুপারভাইজারের কাছে। (অবশ্যই তাদের কাজের উপর ভিত্তি করে- একটা কমন ইমেইল সবাইকে পাঠালে হবে না)।
২. স্কাইপ ইন্টারভ্যু
প্রথম ধাপে যাদের সাথে ইমেইল করা হলো তাদের মধ্য থেকে একাধিক সুপারভাইজার হয়তো স্কাইপ ইন্টারভ্যু'র জন্য বলতে পারে। এই ইন্টারভ্যু'র সময় সুপারভাইজার মূলত বুঝতে চায়- ১. প্রার্থী তার বিষয় সম্বন্ধে ঠিক কতটা জানে, এবং ২. প্রার্থী ঠিকমতো ইংরেজিতে কমিউনিকেট করতে পারে কি-না।
এ দুটো বিষয় ঠিকমতো হলে সে একটি প্রাথমিক একসেপটেন্স লেটার দিতে রাজি হবে।
৩. প্রাথমিক একসেপটেন্স লেটার কমনওয়েলথ এপ্লিকেশন-এর সাথে সংযোজন
কমনওয়েলথ কমিশনকে শক্ত করে বুঝাতে হবে যে (অক্সফোর্ডের/ বা অন্য যেখানে যোগাযোগ হয়েছে সেখানকার) একজন সুপারভাইজার প্রার্থীকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। সেজন্য যেখানে যেখানে বিষয়টি উ্ল্লেখ করার সুযোগ আছে সব জায়গায় সেটা করতে হবে।
৪. অক্সফোর্ডে (বা অন্য টার্গেট বিশ্ববিদ্যালয়ে) ভর্তির প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ
অক্সফোর্ডে আসার জন্য শুধু আইএলটিএস স্কোর থাকলেই চলে। স্কোরটা ৭.৫ থেকে ৮ এর মধ্যে হলে খুবই ভালো হয়। অক্সফোর্ডে ভর্তির জন্য এখানে বিভাগীয় একটা অনলাইন ইন্টারভ্যু দিতে হয়। সেখানে সাধারণত ৩ জনের একটা বোর্ড থাকে। অক্সফোর্ডে ভর্তির আবেদন ফি ৬০ পাউন্ড। সুতরাং এমন ব্যয়বহুল না।
কমনওয়েলথ-এ আবেদনের পাশাপাশি এই ভর্তির বিষয়টি চালিয়ে নেয়া উচিত। আশা করা যায় আগামী বছর মার্চের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটি শেষ হয়ে যাবে।
তখন কমনওয়েলথকে জানাতে হবে যে, অক্সফোর্ডে ভর্তির বিষয়টি সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন স্কলারশিপ হলেই সেখানে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়।

যাদের আগে থেকেই ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেছে তারা এখনই কমনওয়েলথ-এর অনলাইন আবেদনটি পূরণ করার সময় বিষয়টি উল্লেখ করবে।
এভাবে, দুই দিক থেকেই সমান্তরাল চেষ্টা চালালে স্কলারশিপ নিশ্চিত করাটা সহজ হবে।

যারা কমনওয়েলথ নমিনেশন পায় নি
_______________
যারা কমনওয়েলথ এর নমিনেশন পায় নি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হবে। যেমন অক্সফোর্ড বিশ্বদ্যিালয়ের স্কলারশিপগুলো এখান থেকে দেখা যেতে পারে-
http://www.ox.ac.uk/admissions/graduate/fees-and-funding/fees-funding-and-scholarship-search
যাদের ভালো আইএলটিএস স্কোর আছে তাদের অবশ্যই চেষ্টা করা উচিত। এক্ষেত্রেও ধাপ ১, ২ ও ৪ প্রযোজ্য।
আরো যেকোন তথ্য পাবার জন্য এখানে যোগাযোগ করা যেতে পারে
https://www.facebook.com/groups/511545585628590/
এই গ্রুপে অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করছে এমন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয়ভিত্তিক তথ্য পাওয়া যাবে।
অক্সফোর্ডে আবেদনের সকল তথ্য এখানে-
https://www.ox.ac.uk/admissions/graduate/applying-to-oxford/application-guide
আরো কোন প্রশ্ন থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে জবাব দেবো।
আগামী বছর অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ বা নিজ নিজ পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দেখার প্রত্যাশা থাকলো।
সবার জন্য শুভ কামনা।

Colleted From- Mented

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.