Begum Rokeya University , Rangpur



#বেরোবি


২০০৮-০৯ সেশনই ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষাবর্ষ। এই শিক্ষাবর্ষের ভর্তি সেশনে প্রথমে ৩০০ আসনের বিপরীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। দুইটি অনুষদের অধীনে ৬টি বিভাগের মধ্য দিয়ে ৩০০ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে সেই সময়ের ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’। কলা এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ছিলো- বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি এবং বিজনেজ প্রশাসন। বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে ছিলো- গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।

ক্যাম্পাসটির আয়তন ৭৫ (পঁচাত্তর) একর। বর্তমান অনুষদের সংখ্যা ৬টি; সেগুলো হলো- কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান এবং বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদ। পূর্বের কলা এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভেঙে স্বতন্ত্রভাবে কলা অনুষদ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ করা হয়। বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদকে ভেঙে স্বতন্ত্রভাবে বিজ্ঞান অনুষদ ও প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পৃথকভাবে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা নামে দুটি বিভাগ খুলে জীব ও ভূ-বিজ্ঞান নামে নতুন অনুষদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অপরদিকে বিজনেজ প্রশাসন বিভাগকে পুনর্গঠন করে ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ এবং ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ নিয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ নামকরণ করা হয়। বর্তমানে কলা অনুষদের অধীনে বাংলা, ইংরেজি এবং ইতিহাস ও প্রতœতত্ত¡ বিভাগ; সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বর্তমানে অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগ। বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে রয়েছে- গণিত, পরিসংখ্যান, পদাথবিজ্ঞার্ন, এবং রসায়ন বিভাগ। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন বিষয় ওয়েবসাইটে (www.brur.ac.bd ) সন্নিবেশিত করা থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষক- ১৪৫; কর্মকর্তা-১১২; কর্মচারি-৪০০; শিক্ষার্থী প্রায় ৯ হাজার; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ মুখতার ইলাহী নামে ছাত্রদের দুটি আবাসিক হল; শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামে ছাত্রীদের একটি হল এবং অপর একটি হল নির্মানাধীন রয়েছে। ছেলেদের হল দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম-দক্ষিণে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পেছনে অবস্থিত। আর মেয়েদের একটি হল উপাচার্যের বাংলোর পেছনে পশ্চিম-উত্তরে অবস্থিত এবং অপরটি হলটি তার সামনে দক্ষিণে ৩ নং খেলার মাঠে নির্মাণাধীন। শিক্ষকদের জন্য বসবাসের জন্য দুইটি ভবন (ডরমেটরি), কর্মকর্তাদের জন্য দুইটি ডরমেটরি রয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রশাসনিক ভবন এবং কেন্দ্রীয় মসজিদটির সামনে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেজ অনুষদে ২০১৪ সাল থেকে ‘সন্ধ্যাকালীন কোর্স’ চালু আছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এর ‘হেকেপ’ (একটি গবেষণা প্রকল্পের নাম) চালু রয়েছে ২০১২ সাল থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ‘সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এন্ড ইনফরমেশন সেন্টার’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এবং একাডেমিক ভবন ৪ এর পেছনে অবস্থিত। এটি প্রথম দিকে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১১ সালের ১৯ মার্চ নিজস্ব দ্বিতল ভবনের মাধ্যমে নতুন করে যাত্রা করে। কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া উদ্বোধনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি-মসজিদ এবং উপাচার্যের বাসভবন রোড বরাবর প্রশাসনিক ভবনের পেছনে পশ্চিম দিকে। ২০১৬ সালের ১৩ মে উদ্বোধনকৃত কেন্দ্রীয় মসজিদটি ক্যাফেটেরিয়া-মেয়েদের হল এবং উপাচার্যের বাসভবন বরাবর শিক্ষকদের ডরমেটরির পেছনে অবস্থিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন আছে চারটি, সেগুলো কবি হেয়াৎ মামুদ ভবন, একাডেমিক ভবন-২, একাডেমিক ভবন-৩ এবং একাডেমিক ভবন-৪ নামে পরিচিত। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনের দিকে এবং মর্ডান-লালবাগ রোড ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিউট। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ৩ এ অবস্থিত সাইবার সেন্টার এবং দুর্যেগ ব্যবস্থাপনা ই-লার্নিং সেন্টারও রয়েছে। অস্থায়ীভাবে নির্মিত আছে শহীদ মিনার। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রভাগে শহীদ মিনারের পাশে নির্মানাধীন রয়েছে স্বাধীনতা স্মারক। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারি বহনের জন্য মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স, জিপ ও বাস মিলে পরিবহন রয়েছে ১৪ টি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে দৃষ্টিনন্দিত বৃক্ষের নাম অনুসারে দেবদাড়– রোড ( ১ নং রাস্তা), কৃষ্ণচূড়া রোড ( ২ নং রাস্তা), বকুলতলা রোড (৩ নং রাস্তা) এবং উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ৪ নং রাস্তা নামে পরিচিত। এদের প্রবেশদ্বারে গেইটগুলো যথাক্রমে ১ নং, ২ নং , ৩ নং এবং ৪ নং একাডেমিক গেইট নামে পরিচিত। একাডেমিক গেইট ২ কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশদ্বার বা ফটক বলা হয়। এ গেইট দিয়ে ঢুকেই পুলিশফাঁড়ি। এছাড়া এখানকার বেশকিছু জায়গারও নাম চমৎকার। যেমন- বাস স্ট্যান্ডের পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফলক এর নামে ‘হাসিনা চত্ত¡র’; সচরাচর মানববন্ধনগুলো অনুষ্ঠিত হয় চারটি একাডেমিক ভবন এবং প্রশাসনিক ভবনের মিলনস্থলে যার অঘোঁষিত নাম মিডিয়া চত্ত¡র এবং বর্তমান ঘোঁষিত নাম ‘শেখ রাসেল চত্ত¡র।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগানো হয়েছে প্রচুর ফলফলাদি-ঔষুধিসহ নানাজাতের বৃক্ষ।‘সবুজের পথে’সহ অন্যান্য উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় লাগানো হয়েছে এই বৃক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদও নিজ উদ্যোগে লাগিয়েছেন অনেক বৃক্ষ।

বিকাল হলেই ক্যাম্পাসে বসে মিলনমেলা। বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনতা ভীড় জমান ক্যাম্পাসে এসে। ক্যাম্পাসে বিকালে সবুজ ঘাসের উপর বসে স্টাডি গ্রæপ করে বিভিন্ন শিক্ষার্থী। কেউবা আপন মনে বাঁশি বাজায়। একটি মনোরম দৃশ্যের অবতারণা হয়।

@HM Nur Alam

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.