সাবজেক্ট রিভিউ : আইইআর
.
ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চ!
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট!
অনেকের কাছেই এখন নামটা সুপরিচিত। প্রতিষ্ঠার মাত্র ৫বছরের মধ্যে এই ইনস্টিটিউট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে।
.
বর্তমানে ১ম বর্ষের শিক্ষার শিক্ষার্থীরা এই ইনস্টিটিউটের ৫ম ব্যাচ।
৪র্থ ব্যাচ প্রতি আসনে পরীক্ষা দিয়েছিল ৯৬ জন। আর ৫ম ব্যাচের সময় তা দাড়াল ১১১তে।
.
#অবস্থান : জিরো পয়েন্ট থেকে উত্তর দিকের পথে সোহরাওয়ার্দী হলের মোড় থেকে পশ্চিমে সামান্য হেটে আবারও উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে নিরাপত্তা ভবন ও বহুল কথিত ভূতের বাড়ির সামনে দিয়ে দুই ধারে গাছের ছায়াবেষ্টিত পথ আপনাকে পৌছে দিবে গন্তব্যে।
একই সাথে রাস্তার উভয় পাশে প্রকৌশল অধিদপ্তর,জিমনেশিয়াম (ফিজিকাল সাইন্স) ও আই ই আরের অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ এদের একত্রিত করেছে।
নাসির ভাইয়ের ঝুপড়ির পার্শ্বস্থ সিড়ি বেয়ে উপরে উঠলেই আপনি ঘন সবুজের সমারোহ দেখতে পাবেন। পুরাতন কয়েকটি দালান (ক্লাস রুম)এবং নতুন একটি দালান (অফিস, ডিবেট ক্লাব, সেমিনার) আপনার চোখে পড়বে।
জেনে রাখা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন দালান এসব। যার ফলক দেখতে পাবেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসালয়ের সামনে।
.
পুরনো ক্লাস রুম বলে অনেকে হয়ত কিছুটা মনক্ষুন্ন হয়। তবে কয়েক বছর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপরিচিত আইন বিভাগও এখানেই ক্লাস করত।
.
আই ই আরের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল এবং আইন অনুষদ। আর এই তিনের মাঝখানে আছে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল।
.
সুবিধা/অসুবিধা :কলা,বিজ্ঞান,সমাজবিজ্ঞান,ব্যবসায় অনুষদে দেখা যায় একই ভবনের বিভিন্ন তলায় বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত পরিবেশ নেই বললেই চলে।
কিন্তু আই ই আর নীরব ও শান্ত পরিবিশ এবং বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে সগৌরবে দাড়িয়ে আছে বলে শিক্ষার শিক্ষার্থীদের মনোদৈহিক বিকাশের এক অনন্য সুযোগ এখানে আছে।
.
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও কেন্দ্রীয় হসপিটাল সুবিধাও আই ই আর পায় সবার আগে।
তবে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি দূরে হওয়ায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক সেখানে কমই যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
চাকসুর সস্তা খাবারও তাদের কপালে জুটেনা।
.
শিক্ষক: এখানের শিক্ষকগন অভিজ্ঞ,নিজ নিজ বিষয়ে পারদর্শীতা ও গভীর পাণ্ডিত্য রাখেন।
এদের কেউ কেউ কলেজেও ক্লাস নেন একথা সত্য।
তবে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট এর মত তিন জন শিক্ষক দিয়ে একটা ডিপার্টমেন্টের চার বর্ষের ক্লাস,পরীক্ষা চালানোর চেয়ে জনবল বৃদ্ধি করে আই ই আর কে এগিয়ে নিতেই উনাদের এখানে শিক্ষকতার সুযোগ দেয়া হয়েছে এবং তাঁরা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।
এখনো ৫জন পি এইচ ডি ধারী শিক্ষকসহ বেশ শক্তিশালী শিক্ষকবলয় শিক্ষার্থীদের জ্ঞানতৃষ্ণা মেটাতে সচেষ্ট আছেন।
.
অবকাঠামো এবং শিক্ষকসল্পতা অতিদ্রুত কাটিয়ে উঠার প্রতিশ্রুতি বর্তমান উপাচার্য মহোদয় আমাদের দিয়েছেন।
.
জট: সেশন জটের কথা বলতে গেলে আই ই আরের ১ম ব্যাচের নব্য এই ইনস্টিটিউটের প্রাথমিক দিনগুলো ছিল বেশ কষ্ট এবং সংগ্রামের। তাদের সুপরামর্শ এবং দিকনির্দেশনা দেয়ার তখন কেউ ছিলনা। নতুন প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউট কে গুছিয়ে উঠতে ওদের সময় লাগে। বর্তমানে ৫ম ব্যাচের আগমণ ঘটলেও ১ম ব্যাচ এখনো সম্মান কোর্স শেষ করতে পারেনি।
প্রায় ৬মাসের এক সেশন জট তৈরি হয়েছে।
পরের ব্যাচগুলোকেও এই জটের স্বীকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
তবে নতুন কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে জট নিরসনে,সেগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন হলে জটমুক্ত পরিবেশ ফিরে পাবে আই ই আর এই আশা করা যায়।
.
পড়াশুনা:আই ই আরে পড়তে চাইলে কষ্ট করার মানসিকতা রাখতে হবে। শিক্ষার কোর্স ছাড়াও এখানে আপনাকে আপনার স্ট্রিমের সকল বিষয় যেমন বাংলা,ইংরেজী,অর্থনীতি ইত্যাদি সকল কোর্সে বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ করতে হবে।
বর্ষ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়। পূর্ণ ১০০ নম্বরের।
তবে নতুন পরিকল্পনা অনুসারে তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে ৭৫ লিখিত এবং ২৫সেশনাল করার প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে।
এবং বর্ষ পদ্ধতিতে এক্সাম না নিয়ে সেমিষ্টার চালু করারও জোর সম্ভাবনা আছে।
.
সিজিপিএ: প্রথম দিকে সবাই জিপিএ নিয়ে ক্ষুদ্ধ ছিল। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পারস্পরিক বুঝা-পড়ায় এখন তা সমাধানের পথে। এবার প্রথম বর্ষের রেজাল্টে ৩.৬৭,২য় বর্ষে ৩.৫৬ এবং ৩য় বর্ষে ৩.৮৫ পর্যন্ত সর্বোচ্চ জিপিএ এসেছে।
কষ্ট করলে ভালো ফলাফল করা সহজ।
.
জব অপারচুনিটি: সবার আগ্রহ জব অপারচুনিটি সম্পর্কে।
তবে শুনুন, বিসিএস সহ সাধারণ যেকোন চাকরীত রয়েছেই,পাশাপাশি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষার্থীরা জাতীয় কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন বোর্ড, নায়েম,নেইপ,বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড,পিটিআই ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করার সুযোগ আছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোতে শিক্ষা প্রযেক্টে কাজ করার অবারিত সুযোগ আছে।
.
বিভিন্ন দেশে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বিষয়ে প্রচুর স্কলারশীপ আছে।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে আই ই আর চালু করায় শিক্ষক হিসেবে আপনার ক্যারিয়ার গঠনেরও সুযোগ থাকছে।
.
এখানে নিরপেক্ষ ভাবে বলার চেষ্টা করেছি।
আপনার সিদ্ধান্তের সহজীকরণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখছি।
.
লিখেছেন :
শামসুল করিম নাসিম, আইইআর, চবি।