এ্যডমিশন টেস্ট; জীবনের অন্যতম বাজে সময়গুলোর ভেতরে একটি। কিন্তু, সত্যি বলতে এতো টেনশন আর দুশ্চিন্তাময় সময়ের মধ্যেও আমরা এইসময়টাতে কিছু আনন্দ আর মজার ঘটনা দেখি।
যেমন, রাবি সি ইউনিটের এক্সাম দিতে গিয়ে আমি ভূল করে অন্য একটা রুমে ঢুকে পড়ি। এসময় হঠাৎ--অচেনা এক ছাত্র: আররে দোস্ত, কি খবর?? কি অবস্থা??(আমি কিছুক্ষনের জন্য থতমত খেয়ে যাল, আর ভাবি, এইটা আবার কে??)
এরপর--আমি: আররে বন্ধু, কি অবস্থা, এত্তদিন পর দেখা, ভালো আছোস??(এমন একটা ভাব করলাম, যেন মনে হচ্ছিলো বিশ বৎসর পর পরাণের বন্ধুর সাথে দেখা হইলো। অথচ, কেউ কাউরে চিনিই না
রুয়েটের পরীক্ষায় আমার সিট পড়েছিলো গ্লাস এন্ড সিরামিক বিল্ডিং এর বারান্দায়। আমার পিছনে যে বসেছিলো, এক্সাম শেষে তার সাথে কথা হয়।ভাগ্যক্রমে তার সাথে বুটেক্সের এ্যাডমিশন টেস্টের জন্য পূনরায় তার সাথে ঢাকা সিটি কলেজেও দেখা হয়।
তবে, সবচেয়ে ভালো ছিলো সাস্ট থেকে পরীক্ষা দিয়ে আসার বেলায়। সাস্ট বি ইউনিটের এক্সাম দিয়ে ঐদিনই রাতের বেলা উপবন এক্সপ্রেসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। তখন ভাবছিলাম, এইটা হয়তো এখন পর্যন্ত সবথেকে বাজে জার্নি হবে, কারণ, একে সারারাত বসে থাকা, তাও আবার শোভনে(৯০° এ্যাঙ্গেল করা একেকটা সিট । ট্রেনে একেবারে ইন্জিনের পরের বগিতেই ছিলাম, আর যারা ছিলো, সবাই ই ক্যান্ডিডেট। সিট না পাওয়ায় অনেকে পেপার বিছিয়ে শুয়ে পড়ে। ট্রেনে সেসময় আরো দুজনের সাথে পরিচয় হয়। দুজনের বাড়িই ছিলো রাজশাহীতে, একজন ঢাকায় আদমজী ক্যান্টনমেন্টে পড়াশুনা করেছে, আরেকজন রাজশাহীতেই। প্রায় সারারাত আমরা গল্প করি, আর দেখি সমস্ত ট্রেনের লোকজন ঘুমিয়ে, কেবল আমরা ছাড়া।সারারাত হাসি ঠাট্টা আর গল্পে আট ঘন্টার জার্নিটা ভালোই কেটেছিলো। এত লম্বা সময়টা কিভাবে যে এতো দ্রুত পার করে ফেললাম, সেটা বুঝতেই পারলাম না। অতঃপর আমরা সকলেই এয়ারপোর্ট স্টেশনে নেমে যাই। অবাক করা বিষয় ছিলো, আমরা এতো পথ ধরে পুরোনো বন্ধুর মতো কথা আর হাসি-ঠাট্টার মধ্যে দিয়ে আসলাম, অথচ, কেউ কারো নাম জিজ্ঞেস করেছিলাম কিনা তা মনে পড়ে না।
দুঃখের বিষয় একটাই, কারো কোন খোজই এখন জানি না। হয়তো একেকজন আজ দেশের একেক প্রান্তে।
তবুও বলি, যে যেখানেই, যে পজিশনেই থাকুক না কেন,
ভালো থাকুক সবাই.....
--Mahmud Foysal Shadhin
এডমিশন বন্ধুঃ পরিক্ষা দিতে যাওয়ার পথে গড়ে উঠা ক্ষণিক বন্ধুত্বের গল্প
0
February 03, 2018
Tags