মূডল এপে শিক্ষাদান আরো সহজ, দরকার সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগীতা

যারা ভার্সিটিতে পড়েন অথবা পড়ান এই স্ট্যাটাসটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন প্লীজ।
আমি এখন দুইটা ভার্সিটিতে ক্লাশ করি। এতোদিনে যা বুঝলাম এইখানে আমেরিকায় যেকোন কলেজ বা ভার্সিটিতে ঢোকার সাথে সাথেই একটা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলে দেয়। সেই ওয়েবসাইটের একাউন্টে ঢোকলেই আপনি যেসব কোর্স করছেন সেগুলোর লিঙ্ক চলে আসে। টিচাররা সেখানে তাদের যাবতীয় লেকচার শীট, পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড, ডকুমেন্ট সেই সাইটে আপলোড করে রাখেন, ছাত্ররা সেখান থেকে ডাউনলোড করতে পারে। এই সাইটেই এসাইনমেন্টও জমা নেয়ার ব্যবস্থা আছে।
টিচাররা এইসব সাইট থেকে অনেক সুবিধা পান। যেমন জনে জনে জিনিস বিলি করতে হয়না, বারবার বলতে হয়না, ছাত্ররা নিজেরাই বাসায় বসে দেখে নিতে পারে কি কি এসাইনমেন্ট সামনে আসতেছে, শুধু বলে দিলেই হয় তোমাদের একাউন্ট চেক করো। আলাদা খাতায় গ্রেড লিখে রাখারও ঝামেলা নাই, সেই সাইটে আপলোড করে দিলেই হয়, সেখানেই সব গ্রেড ট্রেডেরও হিসাব রাখারও ব্যবস্থা আছে। এমনকি সেখানে এটেনডেন্সও নেয়া যায়। অর্থাৎ টোটাল সলিউশন! বিভিন্ন ওয়েবসাইট এই সেবাটা দেয়, যেমন ব্ল্যাকবোর্ড, মুডল ইত্যাদি, এর মাঝে মুডল পেশী পপুলার। ও হ্যাঁ এমনকি মুডলে পরীক্ষা কিংবা কুইজও নেয়া যায়!
আমি এই দেশে ভাল যে জিনিস দেখি মনে মনে ভাবি আহা এই জিনিস যদি দেশে চালু করা যাইতো! সেই চিন্তা থেকে ভাবলাম একটু ঘেঁটে দেখি নিজেরাই এমন কিছু বানিয়ে দেশে বিক্রি করা যায় কিনা। একটু ঘাঁটাঘাঁটি করার পর কি বের হলো জানেন???? এই জিনিসটা আসলে ফ্রি!! হ্যাঁ, মুডল আসলে ফ্রি!!!
আমি প্রায় তিন বছর ইউজ করার পরেও জানতাম না। আমি ভাবতাম ভার্সিটিদের বুঝি সেসব লাইসেন্স মুডল কোম্পানীর কাছ থেকে ম্যালা টাকা দিয়ে কিনতে হয়। দেশের কথা মনে হইলে খারাপ লাগতো আহা দেশের ভাইব্রাদার যদি পাইতো। আসলে এই সার্ভিস পুরাটাই ফ্রি, ওপেন সোর্স, উইকিপিডিয়ার মতো! বিশ্বের ১০ কোটিরও বেশি ছাত্রছাত্রী এইটা ইউজ করে। কোন ভার্সিটি যদি এই সেবা তার স্টুডেন্টদের জন্য ব্যবহার করতে চায় সেটা একেবারেই ফ্রি!!! হ ভাই হ!! :) :)
আমি জানতাম নর্থসাউথে আগে অফলাইনে এমন একটা রিসোর্স নামে অপশন ছিলো। এই লাইনে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলো এআইইউবি, তারা নিজেরাই এমন একটা সিস্টেম বানিয়ে নিয়েছিলো, সেইটা মুডলের মত এত এফেক্টিভ ছিল কিনা তা অবশ্য জানিনা। অন্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে কি হয় তাও জানিনা। তবে কোন পাব্লিক ইউনিভার্সিটিতে এই সিস্টেম আছে বলে আমার জানা নাই। অথচ জিনিসটা একদম ফ্রি!! এই পৃথিবীর কিছু সহৃদয়বান ব্যক্তি মানুষের শিক্ষার কথা চিন্তা করে সেটা উন্নয়নে কাজ করেন, এর জন্যে দান করেন আরো অনেক সহৃদয় ব্যক্তি।
আমরা বাংগালিরা ফ্রি পাইলে আলকাতরাও খাই, তাইলে এই ভাল জিনিসটা কেন এডপ্ট করবো না? যেখানে পৃথিবীর ১০ কোটিরও বেশি ছাত্র ইউজ করে? ডিজিটাল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতি অবশ্যই মুডল এর মত সাইট থাকা উচিত!!
এইবার টেকনিক্যাল আলাপ। এই ওয়েব এপ্লিকেশনটা বিনামূল্যেই পাবেন, কিন্তু সেইটা হোস্ট করতে হবে ভার্সিটির নিজেদের সার্ভারে। আমার ধারনা ঢাবি সহ সব ভার্সিটির নিজেস্ব সার্ভার এম্নিতেই আছে, সেখানে হোস্ট করলে তো পুরা মাগনাই হয়ে গেলো। নইলে ভাল ডেডিকেটেড হোস্টিং ভাড়া করাও একটা ভার্সিটির জন্য কোন ব্যাপার না, মাসিক সর্বনিম্ন বিশ হাজার থেকে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকায় কেনা হোস্টিং তেই বড়সড় ভার্সিটির কাজ চলে যাওয়ার কথা!
প্রায় প্রতিটা ভার্সিটিতেই কম্পিউটার ক্লাব আছে। তারা এইটা সেটআপ আর মেন্টেইন করার দায়িত্ব নিতে পারে তাদেরই কোন টিচারের তত্ত্বাবধানে। কিভাবে এইটা একেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু করতে হবে সেই টিউটোরিয়াল অনলাইনেই পাওয়া যাবে, সবার নিজেদেরই পারার কথা। সেইটাও না পারলে আমি কোন ভাইব্রাদাররে বইলা দিলে সে সেটাপ করার কাজটা শিখে নিতে পারে, সেই গিয়ে ভার্সিটিতে ভার্সিটিতে সেট করে দিয়ে আস্তে পারে, তারে চা নাস্তার টাকা দিয়া দিলেই হবে।
আজই আপনাদের টিচারকে ধরুন, কর্তৃপক্ষকে ধরুন, কম্পিউটার ক্লাবের পোলাপাইনদের ধরুন এইটা আপনার ক্যাম্পাসে সেট করার জন্য। পরিবর্তন এম্নেই আসেনা, পরিবর্তন আনতে হয়। মুডলের ওয়েবসাইট  বাংলাদেশ আসলেই ডিজিটাল হোক!!! জয় বাংলা!!!
-Shuvo Kamal, USA
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.