নিজের পায়ে হাঁটতে চায় শফিউল


২০১৮ এর ৪ ডিসেম্বর অনেকগুলো মেসেজের একটা ছিলো এমন- ভাইয়া আমি রুয়েট এ বিসিএম ও ঢাবিতে পিউর ম্যথা পেয়েছি। কোনটাতে ভর্তি হবো?

আমি উত্তর দিয়েছিলাম রুয়েট।

যদিও পরে সে ঢাবিতে ফলিত গণিতে ভর্তি হয়।

সেই ছেলেটি আজকে মেসেজ দিয়ে এই ভিডিওটি দিলো আর বলল, ভিডিওটা শেয়ার করবেন। আমাকে নিয়ে নিউজ।

ভিডিওটা দেখে অনেক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে ছিলাম।

এই ছেলেটিই হল শফিউল আলম খান, "গত বছরের ২২ জানুয়ারি সরস্বতী পূজার ছুটি শেষে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি। সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান নিচে। তাঁর দুটি পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি। প্রাণে বাঁচলেও হারাতে হয় দুই পা।
স্থানীয় লোকজন শফিউলকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) স্থানান্তর করা হয়।

সেদিনের ঘটনা বলতে গিয়ে শফিউল আরও জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুতে সেদিন সকালে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটায় প্রচণ্ড যানজট ছিল। শেষে ঢাকা থেকে ভাড়ায় হেলিকপ্টার এসে তাঁকে নিয়ে যায়। সেই থেকে শুরু ব্যয়বহুল চিকিৎসার। পঙ্গু হাসপাতালে টানা এক মাস ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন তিনি। অনেকে তাঁর চিকিৎসার খরচ ও উন্নত মানের দুটি কৃত্রিম পা সংযোজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। বাবার অবসরকালীন টাকা, জমি বিক্রিসহ পরিবারের জমানো প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে তাঁর চিকিৎসার জন্য। প্রায় নিঃস্ব পরিবারটির সামনে এখন শুধুই অন্ধকার।

শফিউলের মা শাহিদা খাতুন বলেন, বড় ছেলেটা তাঁর চাচার ব্যবসা দেখাশোনা করেন। শফিউল মেধাবী হওয়ায় তাঁকে নিয়ে পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল। পঞ্চম শ্রেণি থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত মেধাবৃত্তি পেয়েছেন শফিউল। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ঘরভর্তি শফিউলের পুরস্কার আর কৃতিত্বের সনদ। অথচ দুর্ঘটনায় দুই পা হারানোয় এখন ঘরের ভেতরই দিন কাটে তাঁর।

মায়ের আশা, ছেলের জন্য কেউ না কেউ কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করবেন। দুটি পা সংযোজন করা গেলে শফিউল আগের মতো না হলেও নিজে নিজে চলাফেরাটুকু করতে পারবেন। ছেলেকে আবারও দুই পায়ে দাঁড়াতে সহায়তা করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের দানশীল মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।

মা যখন কথা বলছিলেন, তখন চোখ ভিজে উঠছিল শফিউলের। আবার পড়ালেখায় যুক্ত হতে সহায়তা পাওয়ার আকুতি ছিল তাঁর কণ্ঠেও। জীবন থেকে একটি বছর ইতিমধ্যে হারিয়ে গেছে। সময়ের হিসাবে এটা খুব বেশি সময় নয়। আবারও সবকিছু শুরু করা সম্ভব। উন্নত চিকিৎসায় আবারও সম্ভব দুই পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর। হুইলচেয়ার ছেড়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও পা ফেলতে চান শফিউল। পরিবারের জন্য বোঝা হতে চান না। কেউ কি দাঁড়াবেন পা হারানো মেধাবী শফিউলের এই ছোট্ট একটি ইচ্ছে পূরণে?" (প্রথম আলো)

পোস্টটা লিখতে গিয়ে আমার চোখও ভিজে উঠেছিলো।


একটু অসাবধানতার ফলে একজন মানুষের কতবড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, ভাবা যায়??

ছেলেটার প্রোফাইল ঘুরে দেখলাম অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকতে পারে। অথচ তার স্বপ্নই এখন শুধু নিজের পায়ে হাঁটা!!

এখন বিত্তবানদের এগিয়ে আসাটাই কাম্য। ২৫/২৭ লক্ষ টাকা হলেই তার পায়ের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
সবার উচিৎ শেয়ার করে এ ব্যাপারটা সামর্থ্যবানদের নজরে আনা।

Vedio Link: RTV News
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.